রূপকোঁয়র জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালা

রূপকোঁয়র জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালা

রূপকোঁয়র জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালা

গান

(কোনে) গছে গছে পাতি দিলে ফুলরে শরাই
(রাম রাম)
কলিয়া ভোমোরা গুঞ্জরি আহে গোন্ধকে ধিয়াই(রাম রাম)
কোনে গোলাপি সখিক এনে হাঁহি দিলে

রূপতে রাঙে চরাই-
ওরনি তলতে পরিমল রেণু
উরুয়াই পবনে দিলে বিলাই

অসমিয়া ভাষায় এই গানটি কে রচনা করেছিলেন আমরা সবাই জানি। এই গানটি
জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালার রচনা।

তিনি নিজে গান রচনা করে তাতে সুর সংযোগ করতেন এবং সুমধুর কণ্ঠে গাইতেন। তাঁর লেখা এবং সুরারোপ করা গানকে ‘জ্যোতি সংগীত‘ বলা হয়।

১৯০৩ সালের ১৭ জুন তারিখে ডিব্রুগড়ের তামোলবাড়ি চা বাগানের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জ্যোতিপ্রসাদের জন্ম হয়েছিল৷ তাঁর পিতার নাম ঁপ্রমানন্দ আগরওয়ালা এবং মায়ের নাম কিরণময়ী দেবী।

জ্যোতিপ্রসাদের পূর্বপুরুষ রাজস্থান থেকে এসে তেজপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই এক সাংস্কৃতিক পরিবেশে তিনি বড়ো হয় উঠেছিলেন ডিব্রগড়ে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করার পর উচ্চ শিক্ষার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন।

চলচ্চিত্র বা সিনেমা নির্মাণ সম্বন্ধে শিক্ষালাভের জন্য তিনি জার্মানির বার্লিনেও গিয়েছিলেন সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি ‘জয়মতী‘ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এই ‘জয়মতী’ হল প্রথম অসমিয়া চলচ্চিত্র।

তিনি ছোঁটোদের জন্যও অনেক কবিতা, গান, নাটক লিখেছেন। ছোটোদের জন্য তাঁর লেখা রামায়ণের নাম ‘অকনির রামায়ণ’৷

রূপকোঁয়র জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনেও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এজন্য তাকে কারাবাসও বরণ করতে হয়েছিল৷

তিনি অনেক দেশপ্রেমমূলক গান এবং নাটক রচনা করেছিলেন। চোদ্দৌ বছর বয়সেই তিনি রচনা করেছিলেন ‘শোণিত কুঁয়রি’ নাটক। অসমিয়া সংস্কৃতিকে নতুন নতুন রূপে সাজিয়ে তোলার জন্য তাকে ‘রূপকোঁয়র’ আখ্যায় বিভূষিত করা হয়।

১৯৫১ সালের ১৭ জানুয়ারি তার জীবনাবসান হয়। অসমিয়া জাতীয় জীবনে প্রভূত অবদানের জন্য তাঁর মৃত্যুর দিনটিকে “শিল্পী দিবস” হিসেবে উদযাপন করা হয়।

error: Content is protected !!