আমাদের রাজ্যের নাম অসম। অসম রাজ্য ভারতের উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত বর্তমান অসমের রাজধানী দিশপুর।
অসম রাজ্যের উত্তরে ভুটান দেশ এবং অরুণাচল প্রদেশ। পূর্বে অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যাগু এবং মণিপুর রাজ্য । দক্ষিণে নাগাল্যাণ্ড, মিজোরাম এবং মেঘালয় রাজ্য। পশ্চিমে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, মেঘালয় রাজ্য এবং বাংলাদেশ অবস্থিত।
আমাদের রাজ্যটি প্রাচীনকালে প্রাগজ্যোতিষ, কামরূপ ইত্যাদি নামে পরিচিত ছিল। মহাভারত, রামায়ণ এই দুই গ্রন্থেও নাম দুটির উল্লেখ রয়েছে। প্রাগজ্যোতিষ রাজ্যের রাজধানীর নাম ছিল প্রাগজ্যোতিষপুর এবং এটাই বর্তমান গুয়াহাটি (Guwahati) ।
পরে এই প্রাগজ্যোতিষ রাজ্য কামরূপ নামে পরিচিত ছিল। এই কামরূপ নামটি কীভাবে হয়েছে সেই বিষয়ে একটি প্রাচীন কাহিনি আছে। সেই কাহিনি অনুযায়ী –
“একবার এই জায়গায় কামদেব নামে একজন দেবতা মহাদেবের অভিশাপে অগ্নিদগ্ধ হয়েছিলেন কিন্তু কামদেবের পত্নী রতি দেবীর প্রার্থনায় সন্তুষ্ট হয়ে মহাদেব কামদেবকে পুনর্জীবন দান করেন। অর্থাৎ কামদেব আবার নিজের রূপ ফিরে পাওয়ার জন্য এই জায়গা কামরূপ নামে পরিচিত।”
আমাদের রাজ্যটির বর্তমান নাম অসম কীভাবে হল ?
আমাদের রাজ্যটির বর্তমান নাম অসম কীভাবে হল সে-বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। কয়েকজনের মতে খ্রীষ্টীয় ত্রয়োদশ শতকে আহোমরা আমাদের রাজ্যে আসার পরই রাজ্যটি অসম (Assam) নামে পরিচিতি পায়। এই সম্পর্কে একটি মত আছে যে আহোমরা বীর এবং মহাপরাক্রমী জাতি ছিল, অর্থাৎ তাদের সমপর্যায়ে আর কেউ ছিল না। তা বোঝানোর জন্য তারা “অসম” শব্দটি ব্যবহার করেছিল।
অন্য মতানুসারে, আমাদের রাজ্যটির উপরিভাগ পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী, সমভূমি ইত্যাদি নিয়ে অসমান থাকার জন্য “অসম” (Assam) নামে পরিচিত।
প্রাচীন কাল থেকে অসমে ভিন্ন ভিন্ন জাতি-জনজাতির লোক বসবাস করে আসছে। ভাষার দিক থেকে অসমের জনগণকে অসমিয়া, বাঙালি, বড়ো, কাছাড়ি, কার্বি, মিসিং, রাভা, গারো, ডিমাসা, তিওয়া, দেওরি, মার, কুকি, চা-জনণগোষ্ঠী, মণিপুরি, নেপালি এবং হিন্দিভাষী ইত্যাদি ভাগে ভাগ করতে পারি। এঁদের প্রত্যেকের নিজ নিজ ভাষা ছাড়াও নিজ নিজ পোশাক-পরিচ্ছদ, ধর্ম, উৎসব-পার্বণ ও রীতিনীতি আছে। এইসব গোষ্ঠীর লোক মিলে অসমের বৃহৎ জনসমষ্টি গঠিত হয়েছে।
অসমের মানচিত্র (Map of ASSAM)
মানচিত্রে পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী, সীমা, কোনো জায়গা, ঘর-বাড়ী, জমি-খেত ইত্যাদি বোঝানোর জন্য কিছু চিহ্ন ব্যবহৃত হয়, এই চিহংগুলিকে সাংকেতিক চিহ্ন (Symbol) বলে৷
অসমের প্রধান নদী দুটি হল- ব্রহ্মপুত্র এবং বরাক। এইনদী দুটির দুদিক থেকে অনেক ছোট ছোট নদী এসে প্রধান নদী দুটিতে।পড়েছে। এগুলিকে উপনদী বলে। অসমের কিছু জেলায় পাথর, মাটি, গাছপালা দিয়ে পূর্ণ উঁচু জায়গা আছে এগুলি পাহাড়। জেলাটির সরকারি কাজকর্ম চালানোর জন্য যে জায়গায় জেলাধিপতির কার্যালয় থাকে সেই জায়গাই জেলার সদর। জেলাধিপতিকে উপায়ুক্তও বলা হয়।
আমাদের রাজ্যকে প্রশাসনের সুবিধার জন্য পয়ত্রীশটি জেলায় ভাগ করা হয়েছে। প্রতি জেলায় একটি সদর স্থান আছে। সেইভারে প্রতিটি জেলাকে এক বা ততোধিক মহকুমায় ভাগ করা হয়েছে। বর্তমানে অসমে আশীটি মহকুমা আছে। প্রতিটি মহকুমায় একটি করে সদর স্থান আছে।
Also Read – ভারতের রাজ্য ও রাজধানী