আমরা পাঠে অনেক ধরনের চিহ্ন দেখতে পাই ৷ এগুলোকে বিরাম চিহ্ন বলে। বাক্যে বিরাম চিহের প্রয়োজন আছে। বাক্যের অর্থ ও সম্বন্ধ সুন্দরভাবে প্রকাশ করার জন্য বিরাম চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। বিরাম চিহ্ন সার্থকভাবে ব্যবহার করতে না পারলে বাক্যের সৌন্দর্য নষ্ট হয় এবং ভাব এলোমেলো ও খাপছাড়া দেখায়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষায় প্রথম বিরাম চিহ্নের ব্যবহার করেন। গদ্য সাহিত্যে এধরনের বিভিন্ন অবদানের জন্য তাকে বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়।
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত কয়েকটি বিরাম চিহ্নের ব্যবহার সম্বন্ধে জেনে নিই –
(ক) দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ (।) :- বাক্য যেখানে সম্পূর্ণ শেষ হয় সেখানে দাড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ দিতে হয়। যেমন- আমাদের দেশ ভারতবর্ষ।
(খ) কমা বা পাদচ্ছেদ (,) :- বাক্যের যেখানে অল্প সময়ের জন্য থামতে হয় সেখানে কমা দিতে হয়। যেমন- গরুর দুটি সিং, চারটি পা ও দুটি কান আছে।
(গ) সেমিকোলন (;) :- কমার থেকে একটু বেশি বিরাম বোঝাতে সেমিকোলন ব্যবহৃত হয়। যেমন- মিতা আগে স্কুলে যাবে; পরে মামার বাড়ি যাবে।
(ঘ) প্রশ্নবোধক চিহ্ন (?) :- প্রশ্ন বোঝাতে বাক্যের শেষে প্রশ্নবোধক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যেমন- তোমার বয়স কত?
(ঙ) বিস্ময়সূচক চিহ্ন (!) :- আশ্চর্য বা বিস্ময় বোঝাতে বাক্যে বিস্ময়সূচক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যেমন- আহ্! কি দুঃখের কথা!
(চ) কোটেশন বা উদ্বৃতি চিহ্ন (” “) :- প্রত্যেক উক্তি বোঝাতে কোটেশন চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যথা- চয়ন বলল, “আমি চাঁদপুর যাব”
(ছ) বন্ধনী () – বাক্যের অর্থ পরিষ্কার করার জন্য বেশি কিছু বলার প্রয়োজন হলে, তা বন্ধনীর মধ্যে রাখতে হয়। যেমন- আগামী ৯ মে (রবিবার) রবীন্দ্র জয়ন্তীর অনুষ্ঠান হবে।
(জ) ড্যাস চিহ্ন (–) :- কোনো বাক্যে ভাবের পরিবর্তন ঘটলে ড্যাস ব্যবহৃত হয়। যেমম – একি স্বপ্ন– না মনের ভুল।
(ঝ) কোলন (:) কোলন ড্যাস (:-) :- কোন বিষয়ে বর্ণনা বা উদাহরণ দিতে এসব চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যেমন- অসমের প্রধান
নদী দুটি :- ব্রন্মপুত্র ও বরাক।
(ঞ) হাইফেন (-) :- দুটি পদের সংযোগ স্থলে হাইফেন হয়। যেমন- কচি-কাঁচার মেলা একটি শিশু-সংগঠন।
Also Read – স্বরচিহ্ন কয়টি ও কি কি?