বাংলা ছোট গল্প “অরণ্যে শুভ্র”
একদিন দুপুরে শুভ্র তার গ্যা ঠিক করছিল। হঠাৎ একটি খরগোশ গোনের মধ্য দিয়ে পার হয়ে গেল। শুভ্র সাইকেল রেখে খরগোশটির পেছনে পেছনে দৌড়োতে লাগল।
এভাবে দৌড়োতে দৌড়োতে সে যে অনেক দূরে চলে এসেছে তা টেরই পেল না। একটু অগ্রসর হওয়ার পর সে তার চারদিকে ছোটো বড়ো প্রচুর গাছ দেখতে পেল।
শুভ্র তখন বুঝতে পারল যে সে গভীর অরণ্যে প্রবেশ করেছে। ভয় পেয়ে সে তখন ঘরে ফিরে যেতে চাইল। সে ঘরে ফেরার পথ খুঁজে পেল না। পথ হারিয়ে শুভ্র কীদতে শুরু করল।
তা শুনে একটি ধনেশ পাখি বলে উঠল- ‘ওগো খোকা, তুমি কি জন্য কাঁদছ?’ শুভ্র বলল- ‘আমি ঘরে ফেরার পথ হারিয়ে ফেলেছি’। ধনেশ বলল- ‘একটুও ভয় করবে না, তুমি আমার সাথে গাছের মধ্যে থাকতে পারবে।
আমার সাথে পেঁচা, বাদুড়, হাড়গিলারাও থাকে। নাহলে তুমি ওই গামারি গাছেও থাকতে পারবে, ওই গাছে একটি কাঠঠোকরা থাকে।
আমি তোমাকে- ফলমূল খেতে দেব। শুভ্র গাছে উঠতে পারবে না বলে অন্য পথে যেতে থাকল।
কিছুদূর গিয়ে সে একটি জলাশয় দেখতে পেল। জলাশয়টির তীরে শুভ্র কিছুক্ষণ বিশ্রামের জন্য বসল।
সে জলাশয়টিতে মাছরাঙা, পানকৌড়ি, বক ইত্যাদি নানা জাতের পাখি দেখতে পেলো। এমন সময় একটি হরিণ জলাশয়ে জল খেতে এসে শুভ্রকে দেখে বলল- ‘তুমি এরকম মনমরা হয়ে বসে আছ কেন?’
আরোও পড়ুন –
- বাংলা গল্প – পাখি আর মানুষ
শুভ্র বলল- ‘আমি বাড়ি ফেরার পথ হারিয়ে ফেলেছি। ‘ হরিণ বলল-
‘তুমি আমার সঙ্গে অরণ্যে থাকতে পারবে। সেখানে খরগোশ, সজারু, শুকর প্রচুর প্রাণী রয়েছে। আমরা সবাই তোমাকে আদর করে রাখব’।
হরিণের কথায় কান না দিয়ে শুল এক পা দু পা করে এগিয়ে যেতে লাগল। ঠিক সে সময়ে শুভ্র তার গ্রামের এক দাদু বলভদ্রকে দেখল। সে দৌড়ে গিয়ে তাকে জাপটে ধরল। দাদু জানতে চাইলেন, ‘তুমি এখানে কেন এসেছিলে?’
শুভ্র দাদুর কাছে সব খুলে বলল। বাড়িতে কাউকে না বলে আসার জন্য তিনি গুভ্রের উপর ভীষণ রাগ করলেন। ভবিষ্যতে এভাবে কাউকে না বলে কোথাও যেতে বারণ করলেন।
বাংলা ছোট গল্প অরণ্যে শুভ্র
দাদু শুভ্রকে নিয়ে অরণ্য থেকে ঘরে ফিরে এলেন। পথে শুভ্র দাদুর সাথে অরণ্যের প্রাণীদের গল্প বলল- ‘অরণ্যের প্রাণীরা খুব ভালো, ওরা মানুষের প্রতি কোন অন্যায় করে না, বরং ভালোবাসে। ‘
দাদু শুভ্রের কথায় একমত হলেন তিনি বললেন,
‘মানুষেরও বন্য প্রাণীর প্রতি অন্যায় আচরণ করা অনুচিত। অরণ্যে অনেক মূল্যবান গাছ থাকে। কাজেই আমাদের যত্র-তত্র গাছ কাঁটা থেকে বিরত থাকা উচিত ।’
গাছপালা না থাকলে প্রাণীরা বেঁচে থাকতে পারবে না। বলভদ্র দাদুর সাথে কথা বলতে বলতে শুভ্র ঘরে ফিরে এলো।