মহৎ লোকের মহৎ কথা পাঠের প্রশ্ন উত্তর, পাঠ-৫, Class 5 Bengali Lesson – 5, Class 5 Bengali Notes .
মহৎ লোকের মহৎ কথা
(১)
বাণীকান্ত কাকতি
‘নতুন ডাক্তার হয়েছেন, তার চিকিৎসা খুব ভালো’ – ব্যঙ্গ করে দুজন মানুষ
কয়েকজন
রোগীকে একথা বলে রাস্তার পাশের ঘরটি দেখিয়ে দিলেন । সেই রোগীদের
অনুসরণ করে নতুন ডাক্তারের কাছে আরও রোগীর সংখ্যা বাড়তে লাগল। ডক্টরেট
ডিগ্রি লাভ করার জন্যই যে রোগীরা বিভ্রান্ত হয়েছে, নতুন ডাক্তারের সেটা বুঝতে আর
বাকি রইল না। নতুন ডাক্তারও কোনও কাজে পিছিয়ে যাওয়ার ব্যক্তি নন। তিনি ছিলেন
প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তি । তাই খুব অল্পদিনের মধ্যেই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার বই
কিনে এনে, পড়াশোনা করে সেই চিকিৎসায় পারদর্শী হয়ে উঠলেন। রোগীদের তিনি রোগ
নিরাময়ের জন্য নানা ধরনের বিধান দিতেও শুরু করলেন। অবশেষে এই ব্যক্তির
কর্মস্পৃহা দেখে যারা ব্যঙ্গ-বিদ্রপ করেছিলেন তাঁরাও অবাক হয়ে গেলেন এবং ধীরে
ধীরে তিনি সকলের শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে উঠলেন। এই ডাক্তারই হলেন ডক্টর বাণীকান্ত
কাকতি। প্রকৃত অর্থে তিনি ছিলেন ভাষা-বিজ্ঞানের ডক্টরেট ডিগ্রিধারী। নিষ্ঠা ও
সাধনার বলে মানুষ যে সুখ্যাতি অর্জন করতে পারে, তা আমরা ড° বাণীকান্ত কাকতির জীবন
থেকেই শিখতে পারি।
বাণীকান্ত কাকতির বিষয়ে জেনে নিই
জন্ম = ১৮৯৪ সালের নভেম্বর মাসে
জন্মস্থান = বরপেটা,বাহিকুরিহা
বাবা = ললিতরাম কাকতি
রচিত গ্রন্থ = কলিতা জাতির ইতিবৃত্ত, পখিলা,
দ্য মাদার গডেস কামাখ্যা,
ইত্যাদি
মৃত্যু = ২৫ নভেম্বর, ১৯৫২ সাল।
(২)
মহৎ লোকের মহৎ কথা
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ছেলেটি মায়ের কাছে প্রদীপ জ্বালাতে একটু তেল চাইল। গরিবের সংসার। মা তাই আরেকটু তেল দিতে ইতস্তত করেন, বলেন ‘আর পড়তে হবে না রাত হয়েছে ঘুমোওগে যাও ।’ ছেলেটি কাতর কণ্ঠে বলে, ‘না মা, এ বইটি তাড়াতাড়ি পড়ে শেষ করে কালই বন্ধুকে তার বই ফেরত দিতে হবে।’ ছেলে নাছোড়বান্দা দেখে মা প্রদীপে আরেকটু তেল ঢেলে দেন। পড়তে পড়তে তেল ফুরিয়ে আসে৷ সলতে উস্কে দেয় সে। তারপর তেলহীন প্রদীপ নিভিয়ে মায়ের পাশে ঘুমিয়ে পড়ে পরিদিন ছেলেটি স্কুলে গিয়ে বইটি ফেরত দেয় সহপাঠীকে। অন্যান্য সহপাঠীর কাছে বলতে থাকে গতরাতের পড়া বইয়ের কথা৷
এই মেধাবী ছেলেটির নাম বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বড়ো হয়ে তিনি হয়েছিলেন একজন কালজয়ী সাহিত্যিক।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিষয়ে জেনে নিই
জন্ম = ১২ সেপ্টেম্বর ১৮৯৪, বনগ্রাম, পশ্চিমবঙ্গ।
পিতা = মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়।
মাতা = মৃণালিনী দেবী।
ম্যাট্রিক = ১৯১৪ সালে, প্রথম বিভাগে
উচ্চশিক্ষা = কলকাতার রিপন কলেজ থেকে ১৯১৮ সালে ডিস্টিংশন নিয়ে বি. এ. পাশ করেন।
পেশা = তাঁকে অনেক ধরনের চাকরি করতে
হয়েছে। শেষ জীবনে শিক্ষকতাকেই তিনি
ব্রত
হিসেবে নিয়েছিলেন।
রবীন্দ্র পুরস্কার = ১৯৫০ সালে।
আরও কিছু বই = পথের পাঁচালী, অপরাজিত, আরণ্যক, ইছামতী, অশনি সংকেত, হে অরণ্য কথা কও, মিসমিদের কবচ প্রভৃতি।
মৃত্যু = ১ নভেম্বর, ১৯৫০, ঘাটশিলা, বিহার (বর্তমান ঝাড়খণ্ডে)
(৩)
মহৎ লোকের মহৎ কথা
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
একদিন ধুতি-চাদর আর চটিজুতো পরে এক ভদ্রলোক গর্ভনর হ্যালিডে সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে যান। সাহেব বললেন, “আপনি এর পর যখন আমার কাছে আসবেন তখন ইউরোপীয় পোশাক পরবেন” ভদ্রলোক বললেন, “আপনার সঙ্গে তবে এই আমার শেষ দেখা। আমি ধুতি-চাদর, চুটিজুতো ছাড়তে পারব না, কাজেই আর আসাও হবে না।” হ্যালিডে হেসে বললেন, “তাহলে আপনাকে কিছুই ছাড়তে হবে না, নিজের পোশাকেই আপনি আসবেন”
এই ভদ্রলোকের নাম কী? ইনি স্বনামধন্য ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বিষয়ে জেনে নিই
জন্ম = ১৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ সাল।
জন্মস্থান = বীরসিংহ, মেদিনীপুর
বাবা =ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
মা =ভগবতী দেবী।
মৃত্যু = ২৯ জুলাই, ১৮৯১ সাল।
(৪)
মহৎ লোকের মহৎ কথা
হাজি মহম্মদ মহসিন
গভীর রাত। এক ভদ্রলোক শহরের পথ ধরে বেড়াচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি কুঁড়েঘর থেকে এক মহিলার গলা শুনলেন- “এই দাড়া, ভাতটা ফুটুক তবে তো খাবি।” ঘরে ঢুকে ভদ্রলোক দেখলেন, এঁদের ঘরে চাল-ডাল কিছুই নেই, হাড়িতে শুধুজল চাপিয়ে গরিব বৃদ্ধাটি নাতি নাতনিদের ফাঁকি দিচ্ছেন। ভদ্রলোক তাড়াতাড়ি বাড়ি গিয়ে অনেক রকম খাবার এনে দিলেন। এরপর থেকে তিনি পরিবারটির মাসোহারার ব্যবস্থাও করে দেন। এই মহানুভব মানুষটি কে জানো? ইনি হাজি হাজি মহম্মদ মহসিন৷ মানুষের জন্য তার ছিল প্রাণ ভরা ভালোবাসা।
মহসিনের বিষয়ে জেনে নিই
জন্ম= ১৭৩২ সাল।
জন্মস্থান = হুগলি (পশ্চিমবঙ্গ)
বাবা = হাজি ফৈজুল্লা
মৃত্যু = ১৮২১ সাল
(৫)
আচার্য প্রফুল্পচন্দ্র রায়
দুনিয়ার এক সেরা বিজ্ঞানী একদিন কয়েকজন গণ্যমান্য লোকের সঙ্গে বসে আলাপ করছিলেন। এমন সময় একটি ছেলের চিঠি এল তাঁর হাতে – বড়ো গরিব সে, লেখাপড়ার জন্য সাহায্য চায়। ভদ্রলোক তৎক্ষণাৎ একখানা পোস্টকার্ডে ছেলেটিকে আসতে লিখলেন, অচেনা বলে একটুও ইতস্তত করলেন না। ছাত্রবৎসল মানবদরদি এই বিজ্ঞানীটি ছিলেন আচার্য প্রফুল্পচন্দ্র রায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত অধ্যাপক। তখনকার দিনে হাজার টাকা মাইনে পেয়েও নিজের জন্য চল্লিশ টাকা রেখে বাকিটা তিনি দান করে দিতেন।
প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের বিষয়ে জেনে নিই
জন্ম = ২ আগস্ট, ১৮৬১ সাল।
জন্মস্থান = রাডুলি, খুলনা (বাংলাদেশ)।
বাবা = হরিশচন্দ্র রায়।
মা = ভুবনমোহিনী দেবী।
মৃত্যু = ১৬ জুন, ১৯৪৪ সাল।
(ads)
মহৎ লোকের মহৎ কথা পাঠের প্রশ্ন উত্তর
(ক) একান্ত সাধনার ফলে মানুষ কী অর্জন করতে পারে ?
উত্তরঃ- একান্ত সাধনার ফলে মানুষ সুখ্যাতি অর্জন করতে পারে । সকলের শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে উঠতে পারে ।
(খ) নতুন ডাক্তার কাকে বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ- ড. বাণীকান্ত কাকতিকে নতুন ডাক্তার কাকে বলা হয়েছে ।
(গ) বিভূতিভূষণ মায়ের কাছে অনুনয় বিনয় করছিলেন কেন?
উত্তরঃ- বিভূতিভূষণ
মায়ের কাছে একটু তেলের জন্য অনুনয় বিনয় করছিলেন কারণ বইটি তাড়াতাড়ি রাতেই
মধ্যেই পড়ে শেষ করে কালই বন্ধুকে বইটি ফেরত দিতে হবে।
(ঘ) হ্যালিডে সাহেব ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে পোশাক পাল্টাতে হবে কেন
বলেছিলেন?
উত্তরঃ- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ভারতবর্ষে যখন ইংরেজ শাসন চলছিল
সেই সময়ের মানুষ। তা সত্বেও তিনি খাঁটি স্বদেশী ছিলেন৷ ইংরেজ শাসকের অধীনে থাকার
জন্য গভর্নর হ্যালিডে সাহেব বিদ্যাসাগরকে পোশাক পাল্টাতে বলেছিলেন। কিন্তু এই
দৃঢ় চরিত্রের মানুষটি আত্মসম্মান বিসর্জন দেননি।
(ঙ) মহম্মদ মহসিন যে দয়ালু ব্যক্তি ছিলেন, তার পরিচয় দাও?
উত্তরঃ- একদিন
মহম্মদ মহসিন শহরের পথ ধরে বেড়াচ্ছিলেন তখনহঠাৎ একটি কুঁড়েঘর থেকে এক মহিলার
গলা শুনলেন- “এই দাড়া, ভাতটা ফুটুক তবে তো খাবি।” ঘরে ঢুকে ভদ্রলোক দেখলেন,
এঁদের ঘরে চাল-ডাল কিছুই নেই, হাড়িতে শুধুজল চাপিয়ে গরিব বৃদ্ধাটি নাতি
নাতনিদের ফাঁকি দিচ্ছেন। ভদ্রলোক তাড়াতাড়ি বাড়ি গিয়ে অনেক রকম খাবার এনে
দিলেন। এরপর থেকে তিনি পরিবারটির মাসোহারার ব্যবস্থাও করে দেন।মানুষের জন্য তাঁর
ছিল প্রাণভরা ভালোবাসা ।
(চ) প্রফুল্পচন্দ্র রায় নিজের মাইনে থেকে মাত্র চল্লিশ টাকা রেখে বাকিটা দান করে
দিতেন কেন?
উত্তরঃ- ছাত্রবৎসল মানবদরদী বিজ্ঞানী ছিলেন আচার্য
প্রফুল্লচন্দ্র রায়। দুনিয়াজোড়া তাঁর নাম। পৃথিবী বিখ্যাত এই বিজ্ঞানী কয়েকজন
গণ্যমান্য লোকের সঙ্গে বসে আলাপ করছিলেন। এমন সময় একটি ছেলের চিঠি বিজ্ঞানীর
হাতে এল। চিটজিতে লেখা আছে দেখলেন – খুব গরিব সে, লেখাপড়ার জন্য সাহায্য
চায়। অচেনা বলে একটুও দ্বিধাগ্রস্ত না হয়ে পোস্টকার্ডে ছেলেটিকে আসতে লিখলেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত অধ্যাপক। তখনকার দিনে হাজার টাকা মাইনে পেয়েও
নিজের জন্য চল্লিশ টাকা রেখে বাকিটা তিনি দান করে দিতেন।
ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করার পর ডক্টর বাণীকান্ত কাকতিকে নিয়ে কী ঘটনা ঘটেছিল?
-সংক্ষেপে লেখো।
উত্তরঃ- ড° বাণীকান্ত কাকতি প্রকৃত অর্থে ভাষা-বিজ্ঞানের ডক্টরেট
ডিগ্রীধারী ছিলেন। কিন্তু নামের আগে ডক্টর উপাধি থাকায় সাধারণ মানুষ তাকে
চিকিৎসক ভাবতে শুরু করে। মানুষজন তাঁর কাছে যাতায়াত শুরু করে। এই নিয়ে অনেকে
ব্যঙ্গ বিদ্রপও করে। ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করার জন্যই যে রোগীরা বিভ্রান্ত হয়েছে
বাণীকান্ত কাকতির বুঝতে বাকি থাকে না। প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত বাণীকান্ত কোনো কাজে
পিছিয়ে যাওয়ার ব্যক্তি নন৷ তিনি খুব অল্পদিনের মধ্যেই হোমিওপ্যাথি
চিকিৎসার বই কিনে এনে পড়াশোনা করে সেই চিকিৎসায় পারদর্শী হয়ে উঠলেন। রোগীদের
নিরাময়ের জন্য বিধান দিতে শুরু করলেন। অবশেষে ডক্টর বাণিকান্ত কাকতির কাজের ধরন
দেখে যারা বিদ্রপ করেছিলেন তারাও অবাক হয়ে গেলেন এবং ধীরে ধীরে তিনি সকলের
শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে উঠলেন৷
“তাহলে আপনাকে কিছুই ছাড়তে হবেনা, নিজের পোশাকেই আপনি আসবেন” – উক্তিটি কে, কার উদ্দেশে, কেন করেছিলেন।
উত্তরঃ- একদিন ধুতি চাদর আর চটিজুতো পরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর গভর্ণর হ্যালিডে সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে যান। হ্যালিডে সাহেব বললেন এরপর যেদিন বিদ্যাসাগর তার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন যেন ইউরোপীয় পোশাক পরে যান। তখন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উত্তর দিলেন যে তাহলে তার সাথে আর হ্যালিডে সাহেবের দেখা হবে না। কারণ তিনি ধুতি চাদর চটিজুতো ছাড়তে পারবেন না। কাজেই আরর আসাও হবে না। তখন হ্যালিডে সাহেব হেসে উপরের কথাগুলি বলেছিলেন।
শব্দের অর্থ লেখো। (শব্দ-সম্ভারের সাহায্যে)
বিভ্রান্ত = কী করতে হবে বুঝতে পারে না এমন।
পারদশশী= নিপুণ, পটু।
স্পৃহা=
ইচ্ছা, কামনা।
নিষ্ঠা = কোনো কাজে গভীর মনোযোগ ৷
ইতস্তত = এখানে ওখানে,
নানা দিকে ।
মাসোহারা = প্রতি মাসে প্রদেয় ভাগ বৃত্তি না দান।
গণ্যমান্য
= সমাদরের পাত্র ।
তৎক্ষণাত = তখনই, তাড়াতাড়ি ৷
মেধাবী =
বুদ্ধিমান ।
প্রখর = কড়া, অতি উগ্র৷
নিরাময় = সুস্থ, নীরোগ
।
বিদ্রুপ = ঠাট্টা, উপহাস, তামাশা ।
নাছোড়বান্দা = যে লোক
ছাড়ার পাত্র নয়।
মহানুভব = উদারচিত্ত, মহাপ্রাণ।
বৎসল = স্নেহযুক্ত।
খ – ভাষা-অধ্যয়ন (ব্যবহারিক ব্যাকরণ)
নীচের শব্দগুলো থেকে যুক্তবর্ণগুলো বেছে নিয়ে ভেঙে দেখাও।
নিষ্ঠা = ষ্ঠ = ষ + ঠ
বিজ্ঞানী = জ্ঞ = জ + ঞ
ডক্টর = ক্ট = ক + ট
নীচের রেখাঙ্কিত পদগুলোর পরিবর্তে সর্বনাম পদ ব্যবহার করে বাক্যগুলো আবার লেখো।
(ক) ডক্টর বাণীকান্ত কাকতি একজন ভাষা-বিজ্ঞানী ছিলেন।
উত্তরঃ- তিনি একজন
ভাষা-বিজ্ঞানী ছিলেন।
(খ) রহিম মনোযোগ সহকারে পড়া-শোনা করে।
উত্তরঃ- সে মনোযোগ সহকারে পড়া-শোনা
করে।
(গ) মিতা গান গাইতে ভালোবাসে।
উত্তরঃ- সে গান গাইতে ভালোবাসে।
বাক্য রচনা করো।
ছাত্রবৎসল = আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ছাত্রবৎসল ছিলেন।
বিখ্যাত =
বিদ্যাসাগর দয়ার সাগর নামে বিখ্যাত ছিলেন।
ইতস্তত = কুকুরটি রাস্তায়
খাবারের খোঁজে ইতস্তত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে৷
কুঁড়েঘর = গ্রামে কুঁড়েঘর দেখা
যায়।
স্বনামধন্য = বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় স্বনামধন্য সাহিত্যেক৷
বুদ্ধিদীপ্ত
= বুদ্ধিদীপ্ত আলোচনা শুনতে ভালো লাগে।
বিপরীতার্থক শব্দ লেখো।
হেসে = কেঁদে
গরিব = ধনী
অচেনা = চেনা
শেষ = শুরু
আসা =
যাওয়া
অল্প = বেশি
একটি শব্দে লেখো। (এক কথায় প্রকাশ)
(ক) যিনি শিক্ষাদান করেন = শিক্ষক।
(খ) যিনি রোগীর শুশ্রযা করেন =
ডাক্তার।
(গ) যিনি ভাষা চর্চা করেন = ভাষা-বিজ্ঞানী৷
(ঘ) যিনি বিজ্ঞান
চর্চা করেন = বিজ্ঞানী৷
ধ্বনি বা আওয়াজ কাকে বলে?
তোমরা প্রতিদিন বাইরে অনেক রকম আওয়াজ শোন, যেমন, তোমাদের পুষি
ডেকে ভঠল-
ম্যাঁও, বাঘা ডেকে উঠল- ঘেউ, রাস্তায় মোটরের হর্ন বাজল- প্যাঁ-অ্যা
আয,
চেয়ারটাকে টানতে- ক্রাচ্ করে উঠল। এরকম আরও কত কী! এ গুলো আওয়াজ বা ধ্বনি;
এগুলোর আলাদা কোনো অর্থ নেই।
শব্দ বলতে কি বুঝো?
একটি উদাহরণ থেকে বুঝতে পারি যেমন – মা তোমাকে বললেন- “জল খাও”। এবার তুমি দুটো ধ্বনিরই অর্থ বুঝতে পারলে। যে ধ্বনির অর্থ আছে, তা-ই শব্দ।
এবার তোমরা আরও কয়েকটি শব্দ তৈরি করে নাও- শ্রীকান্ত, ভাই, মাঠ, খেল। এই শব্দগুলোর প্রত্যেকটিরই নিজস্ব অর্থ আছে। এখন শব্দগুলো সাজালে দাড়াবে “শ্রীকান্তের ভাই মাঠে খেলে” এবার অর্থ পরিষ্কার হয়েছে তো? শব্দগুলোর সঙ্গে কতগুলো চিহ্ন যুক্ত হয়ে অর্থপূর্ণ একটি বাক্য তৈরি হল। এভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হলে শব্দকে পদ বলা হয়। বাক্যের গঠনকে প্রকারান্তরে ভাষার গঠন বলতে পারি।
ওপরের উদাহরণ অনুযায়ী নীচের শব্দগুলোকে সাজিয়ে খাতায় লেখো।
(ক) নিষ্ঠা ও সাধনা বল মানুষ যে সুখ্যাতি অর্জন করত পার।
উত্তরঃ- নিষ্ঠা ও
সাধনা বলের দ্বারা মানুষ যে সুখ্যাতি অর্জন করতে পারে৷
(খ) এক সময় শেষ কর ফেল বইটি।
উত্তরঃ- এক সময় বইটি শেষ করে ফেল ।
(গ) এই ভদ্রলোক নাম কী?
উত্তরঃ- এই ভদ্রলোকের নাম কী?
(ঘ) এমন সময় একটি ছেলে চিঠি এল তার হাত।
উত্তরঃ- এমন সময় একটি ছেলের চিঠি
তাঁর হাতে এল।
ভাষা
ভাষার রূপ কয়টি ও কি কি?
উত্তরঃ- ভাষার রূপ দুটো যেমন- কথিত বা কথ্য
রূপ ও লিখিত বা শিষ্ট রূপ।
কথিত ভাষা কাকে বলে?
উত্তরঃ- বিভিন্ন অঞ্চলে বাক্যালাপের সময় যে ভাষা
ব্যবহার করা হয় তাকে কথিত ভাষা বলে।
লিখিত বা শিষ্ট ভাষা কাকে বলে?
উত্তরঃ- যখন নির্দিষ্ট অঞ্চলের
কথ্য ভাষাকে
অবলম্বন করে শিষ্ট ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয় তখন সেই
ভাষা-রূপকে লিখিত বা শিষ্ট ভাষা বলা হয়।
নীচের অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর বলো ও লেখো।
ছেলেটি খুব বুদ্ধিমান। বয়সে ছোটো হলেও বুদ্ধি প্রখর। সব বাচ্চাদের মতো সে-ও স্কুলে যায়। শিক্ষকের কথা মন দিয়ে শোনে । আবার নানা প্রশ্ন করে শিক্ষকদের । তবে ছোটোবেলা থেকেই তার মনে একটা ধর্মের ভাব কাজ করে সবসময় । একদিন স্কুলে সে একজন শিক্ষককে প্রশ্ন করল, ‘আচ্ছা ঈশ্বর যে আছেন, তার কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেন’। মাত্র পাঁচ বছরের ছেলের মুখে এই প্রশ্ন শুনে অবাক হয়ে যান সেই শিক্ষক।
এই ছোটো ছেলেটির নাম নানক। বড়ো হয়ে তিনি গুরু নানক হিসেবে পরিচিত হন। তিনি শিখধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। পাঞ্জাবের অমৃতসরে যে স্বর্ণমন্দির আছে, সেই মন্দিরে – নানকের লেখা নানা উপদেশ, ভজন ও স্তব আছে। সেগুলোই একত্রিতভাবে গ্রন্থসাহেব নামে পরিচিত। এই গ্রন্থ শিখদের কাছে পবিত্র গ্রন্থ।
বড়ো হয়ে একদিন তিনি তীর্থলরমণে বেরিয়ে পড়লেন। বিভিন্ন তীর্থ ঘুরে ঈশ্বরের উপলব্ধি করলেন। একবার তীর্থে গিয়ে তিনি ঝামেলায় পড়লেন। পশ্চিম দিকে পা রেখে তাঁকে শুয়ে থাকতে দেখে একজন মোল্লা তাকে তিরস্কার করে বললেন, “তুমি পবিত্র মক্কার দিকে পা রেখে শুয়ে আছ কেন?”
নানক রাগ না করে তাঁকে বললেন, “ঈশ্বর যেদিকে নেই, সেদিকে আমার পা ঘুরিয়ে দিন।” মোল্লা নিজের ভুল বুঝতে পারেন। আর বুঝতে পারেন ঈশ্বর চিন্তায় নানক কত উন্নত।
(ক) নানক শিক্ষককে কী প্রশ্ন করেছিলেন?
উত্তরঃ- নানক শিক্ষককে প্রশ্ন
করেছিলেন – ঈশ্বর যে আছেন তাহার কোনো প্রমাণ দেখাতে পারবেন কিনা ।
(খ) শিখদের পবিত্র গ্রন্থের নাম কি?
উত্তরঃ- শিখদের পবিত্র গ্রন্থের নাম –
গ্রন্থসাহেব।
(গ) নানক তীর্থে গিয়ে কী ঝামেলায় পড়েছিলেন?
উত্তরঃ- গুরু নানক তীর্থ
ভ্রমণে গিয়ে একবার ঝামেলায় পড়েছিলেন৷ পশ্চিম দিকে পা রেখে নানককে শুয়ে থাকতে
দেখে একজন মুসলমান তাঁকে ভৎর্সনা করে বলল যে নানক পবিত্র মক্কার দিকে পা রেখে
শুয়ে আছে।
নানক রাগ না করে মুসলমানটিকে বললেন যে, “ঈশ্বর যেদিকে নেই, সেদিকে পা ঘুরিয়ে দিতে।” মুসলমান লোকটি নিজের ভুল মেনে নিল এবং বুঝতে পারল গুরু নানকের ঈশ্বরচিন্তা কতটা উন্নত৷
ধাঁধাটি বলো।
গাছে হয়
ঘরে আনি
রান্না হয়
খাওয়ার সময় ফেলা হয় ।
উত্তরঃ- তেজপাতা।
“মহাভারত” শব্দটি দেখো। এই শব্দটি থেকে ব্যঞ্জনবর্ণগুলো দিয়ে বিভিন্ন অর্থপূর্ণ শব্দ লেখো।
উদাহরণ – ম – মমতা, মহিয়সী, মহান
হ – হতভম্ব, হতভাগ্য, হতভাগা
ভ – ভক্ত, ভর্তি,
র – রসিক, রকমারি
ত – তত্ত্ব, তন্দ্রা, তৎক্ষনাৎ
আরোও পড়ুন – পাঠ – ৬ অরুণোদয়