গাছপালা থেকে আমরা কি কি পাই ? আমাদের চারিদিকে অনেক গাছপালা আছে। এই গাছপালাগুলো ভিন্ন ভিন্ন ধরনের ৷ কিছু কিছু গাছ বড় ও কিছু কিছু গাছ ছোট। কোনো কোনো গাছ মাটিতে ও কোনো কোনো গাছ জলে হয়। এই গাছপালাগুলো হল উদ্ভিদ৷
একটি আম ও একটি লাউ গাছের কথা ভাবলে দেখা যায় । আম গাছশক্ত ও সোজা এবং উঁচু হয়ে দাড়িয়ে থাকে। অন্যদিকে লাউ গাছ কোমল ও লিকলিকে, তা দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে বাঁকা হয়ে যায়। আম, জাম, কাঁঠাল, শাল, অশ্বত্থ ইত্যাদি গাছপালা খুব বড়, কাণ্ড শক্ত ও শাখা-প্রশাখাযুক্ত। এই গাছগুলোর কাণ্ড স্পর্শ করলে অনুভব হয় যে এইসব গাছ খুব শক্ত। এ ধরনের উদ্ভিদগুলি হল বৃক্ষ।
অসমের শাল ও সেগুন অত্যন্ত মূল্যবান বৃক্ষ। এই বৃক্ষ থেকে প্রাপ্ত কাঠ দিয়ে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত চেয়ার, টেবিল, রঞ্চ, ঘরের দরজা-জানালা ইত্যাদি তৈরি করা হয়। এইসব কাঠ অসমের বাইরেও পাঠানো হয়।
অসম চা চাষের জন্য বিখ্যাত। আমরা অনেক চা বাগান দেখেছি। চা গাছগুলো বেঁটে ও ঝোপের আকারে থাকে। আমরা সবসময় দেখি যে গোলাপ, টগর, যূথিকা, জবা, ডালিম ইত্যাদি গাছওলো বেঁটে ও ঝোপযুক্ত। এই স্বল্প উঁচু ঝোপযুক্ত গাছ গুলো হচ্ছে গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ।
গাছপালা থেকে আমরা কি কি পাই – ঝিঙে, করলা, লাউ, কুমড়ো, শশা ইত্যাদি গাছের জন্য তৈরি বাঁশের মাচা নিশ্চয়ই দেখেছি। কখনো চিন্তা করেছি কি বাঁশের মাচার প্রয়োজন কী? এই উদ্ভিদণ্ডলো কোমল ও লিকলিকে, এরা লতিয়ে চলে ৷ লতিয়ে চলার জন্য মাচা তৈরি করতে হয়। এছাড়া, কিছু কিছু গাছ অন্য গাছকে আশ্রয় বেড়ে ওঠে। যেমন – পান, পুই, বিঙে ইত্যাদি। কিছু সংখ্যক আবার মাটিতে লতিয়ে চলে। যেমন- মিষ্টি লাউ, তরমুজ ইত্যাদি। এভাবে লতিয়ে চলা উদ্ভিদণ্ডলোই হচ্ছে- লতাজাতীয় উদ্ভিদ।
দূর্বাঘাস, ঘাস, ধান ইত্যাদি উদ্ভিদণ্ডলো ছোট ও কাণ্ড নরম। তেমনি ভিন্ন ভিন্ন শাক-সবজির কাণ্ড নরম। কিছু কিছু গাছের কাণ্ড আবার ফাপা। যেমন-বাঁশ। এগুলি হল তৃণজাতীয় উদ্ভিদ।
গাছপালা আমাদের কি কি কাজে লাগে?
গাছপালা আমাদের অনেক কাজে লাগে। গাছ থেকে আমরা ফুল, ফলমূল, শস্য, জ্বালানি কাঠ, ঘর বানানোর সামগ্রী যেমন- কাঠের তক্তা,বরগা ইত্যাদি পাই। কাঠের দ্বারা আমরা চেয়ার-টেবিলসহ নানা ধরনের আসবাবপত তৈরি করি। পরিধেয় কাপড়ও গাছ থেকে প্রাপ্ত আশ- যেমন কার্পাসের আঁশ থেকে প্রস্তুত হয় পরিধেয় কাপড় । ঔষধ ও সুগন্ধি দ্রব্যও গাছ থেকে পাওয়া যায়। গাছের ফল-ফুল আমাদের অনেক কাজে লাগে। গাছ যে ছায়া দিয়ে জায়গাটিকে শীতল করে রাখে সে কথাও আমরা ভুলতে পারি না।
আমাদের প্রয়োজনীয় বায়ু গাছপালা নির্মল করে রাখে, গাছ এত কাজে লাগে- সেই গাছপালাকে কেটে ফেললে কী অসুবিধা হবে- আমরা কি ভেবে দেখেছি?
গাছ কাটলে নিজেদের বড় অনিষ্টকে ডেকে আনা হরে। সেজন্য সর্বদাই গাছপালাকে সংরক্ষণ করা উচিত; কখনো গাছ-পালা কেটে নষ্ট করা উচিত নয়।
এক গোছা ঘাস উপড়ে আনলে দেখা যায় যে মাটির নীচে ঢুকে থাকা ঘাসের একটি অংশ , এই অংশটি হচ্ছে শিকড়। গাছ শিকড়ের সাহায্যে জল শোষণ করে। শিকড় মাটি আঁকড়ে ধরে গাছকে দাড়িয়ে থাকতে সাহায্য করে। এর ফলে মাটি ক্ষয় হয় না।
উদ্ভিদের শিকড় মাটি ক্ষয় রোধ করে এবং মাটি সংরক্ষণে সাহায্য করে। |
পাতা আমরা কী কী কাজে ব্যবহার করি?
- খাদ্যদ্রব্য রাখার জন্য কলাগাছের পাতা ব্যবহার করতে নিশ্চয় আমরা সবাই দেখেছি।
- কিছু কিছু পাতা শাক হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয়।
- তেজপাতা রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়।
- চা-গাছ থেকে চা-পাতা প্রস্তুত করা হয়।
- তাল গাছের পাতা দিয়ে কৃষকদের ছাতা বানানো হয়।
- তাল গাছের পাতা দিয়ে পাখা তৈরি হয়।
- তুলসী, দূর্বাঘাস, নিমপাতা ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
- সিট্রানেলা গাছের পাতা থেকে তেল বের করা হয়৷ এই তেল ভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়৷
গাছপালা থেকে আমরা কি কি পাই\
আড়োও পড়ুন – ফুল থেকে আমরা কি কি পাই ?