সম্প্রদায়ের একটি কাহিনী
Bengali Story | বাংলা গল্প ও কাহিনী | বনাঞ্চল রক্ষণাবেক্ষণে অনুপ্রেরণা জাগানোর ক্ষেত্রে বিসনয় সম্প্রদায়ের একটি কাহিনী।
রাজস্থানে বিসনয় নামের একটি জনগোষ্ঠী আছে। তাদের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল গাছ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা। তোমরা যদি কখনও রাজস্থানের বিসনয় সম্প্রদায়ের লোকের বসবাস করা কোনো গ্রামে যাও তাহলে দেখবে সেখানে বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী যেমন- নীলগাই, হরিণসহ অনেক ধরনের পশু মুক্তভাবে বিচরণ করছে। এক সময় বনাঞ্চল রক্ষা করতে গিয়ে বিসনয় সম্প্রদায়ের কয়েকশো লোকের প্রাণ দিতে হয়েছিল।
প্রায় দুশ পঞ্চাশ বছর আগে রাজস্থানের যোধপুরে একজন রাজা ছিলেন । একবার একটি দুর্গ তৈরি করার জন্য কাঠের প্রয়োজন হয়েছিল । কাছেই বিসনয় সম্প্রদায়ের একটি গ্রাম ছিল । রাজা গ্রামের পাশের একটি বনাঞ্চল থেকে কাঠ কেটে আনার জন্য কয়েকজন কাঠুরেকে পাঠিয়েছিলেন কিন্ত বিসনয় সম্প্রদায়ের লোকেরা কাঠুরেদের তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। এতে রাজা ভীষণ রাগ করে কাঠরেদের সঙ্গে সৈন্য-সামন্ত পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বিসনয়রা জানতে পেরেছিল যে রাজা কাঠুরেদের সঙ্গে সৈন্য-সামন্ত পাঠিয়েছেন। তখন আশেপাশের আরো বিসনয় সম্প্রদায়ের লোক জড় হয়ে বনাঞ্চল রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন।
প্রত্যেকেই এক একটি গাছকে জড়িয়ে ধরে রয়েছিলেন ৷ তারা সৈন্যদের উদ্দেশ্যে
বলেছিলেন “তোমরা আগে আমাদের কাটো তারপর গাছ কাটবে”।এরকম পরিস্থিতি দেখে
সেনাপতি
সৈন্যদের গ্রামের লোকদের মেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেইঅনুসারে
কাজও হয়েছিল । এই ঘটনায় কমপক্ষেও ৩৬০ জন লোকের মৃত্যু হয়েছিল ৷ এই দৃশ্য দেখে
কাঠুরেরা গাছ কাটতে অস্বীকার করেছিল।
এই ঘটনার পর রাজা খুব অনুতপ্ত হয়েছিলেন । তিনি গ্রামে এসে গ্রামবাসীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। শেষে রাজা নিজেই ঘোষণা করেছিলেন যে বিসনয় সম্প্রদায়ের লোকের বসবাস করা গ্রামের আশে-পাশে গাছ কাটা ও প্রাণী হত্যা নিষেধ । অতীত থেকেই বিসনয় সম্প্রদায়ের লোক এভাবে বনাঞ্চল রক্ষা করে আসছে এই কাহিনিটি একটি উদাহরণ মাত্র । আজও পৃথিবীতে বিভিন্ন জায়গার মানুষ নানাভাবে বনাঞ্চল রক্ষা করার চেষ্টা করে আসছে।
*****