আমাদের উদ্যোগসমূহ (পাঠ-১০) Class V Environment Lesson 10 Question Answer. আমাদের উদ্যোগসমূহ Class 5. আমাদের উদ্যোগসমূহ পাঠ-১০ এর প্রশ্ন উত্তর। পঞ্চম শ্রেণীর পরিবেশ । Class V Environment Science Question Answer Lesson 10, আমাদের উদ্যোগসমূহ (পাঠ-১০) Class 5 Environment Science.
আমাদের উদ্যোগসমূহ পাঠের অনুশীলনীর প্রশ্ন উত্তর
১। সংক্ষেপে উত্তর দাও
(ক) কাঁচামাল বলতে কী বোঝো ?
উত্তর:-প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত যেগুলো সামগ্রী ব্যবহার করে আমাদের প্রয়োজনীয়
বস্তুগুলো উৎপাদন করা হয় সেগুলোকে কাঁচা সামগ্রী বা কাঁচামাল বলে ৷
(খ) উদ্যোগ গড়ে তোলার জন্য কেন উন্নত যাতায়াত ও পরিবহনের প্রয়োজন হয়?
উত্তর:- উদ্যোগ গড়ে তোলার জন্য কাঁচামাল আমদানি করা এবং উৎপাদিত সামগ্রী রপ্তানি
করার জন্য উন্নত যাতায়ত ও পরিবহনের প্রয়োজন হয়।
(গ) উদ্যোগ গড়ে ওঠার জন্য কি কি প্রয়োজন লেখো।
উত্তর:- একটি উদ্যোগ গড়ে উঠতে পর্যাপ্ত পরিমানে কাঁচামালের প্রয়োজন তাছাড়াও ভূমি,
মূলধন, উন্নতমানের যন্ত্রপাতি, দক্ষ শ্রমিক, উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা, তাপবিদ্যুৎ
বা জলবিদ্যুৎ ইত্যাদির প্রয়োজন হয়৷
(ঘ) লোহা ও ইস্পাত উদ্যোগের জন্য কী কী কাঁচামাল প্রয়োজন?
উত্তর:-লোহা ও ইস্পাত উদ্যোগের জন্য আকরিক লোহা, কয়লা ও চুনাপাথর ইত্যাদি
কাঁচামালের প্রয়োজন হয়।
(ঙ) পাটের কাপড় কিভাবে তৈরি করা হয়?
উত্তর:-তুঁত গাছের চাষ করে শূককীট পালন করা হয়। তুঁত গাছের পাতা শূককীটের খাদ্য।
কীট নিঃসৃত লালা থেকে রেশম সুতো বের করে রেশম বা পাটের কাপড় তৈরি করা হয়৷
২। শূন্য স্থান পূরণ করো -
(ক) মুম্বাই ভারতের আধুনিক ________ উদ্যোগের প্রধান কেন্দ্র ।
উত্তর:-মুম্বাই ভারতের আধুনিক ___বস্ত্র____ উদ্যোগের প্রধান কেন্দ্র।
(খ) কাগজ উদ্যোগের প্রধান কাঁচামাল হল __________ ।
উত্তর:- কাগজ উদ্যোগের প্রধান কাঁচামাল হল ____বাঁশ __।
(গ) ভারতের সবচেয়ে বেশি রেশম কাপড় _________ রাজ্যে উৎপন্ন করা হয়।
উত্তর:-ভারতের সবচেয়ে বেশি রেশম কাপড় __কর্ণাটক__ রাজ্যে উৎপন্ন
করা হয়।
(ঘ) চিনি উদ্যোগের প্রধান কাঁচামাল হল ____________।
উত্তর:- চিনি উদ্যোগের প্রধান কাঁচামাল হল ____আখ____।
৩। 'ক' অংশের সঙ্গে 'খ' অংশ মেলাও-
'ক' | 'খ' |
---|---|
তেল শোধনাগার | কাঁঠালগুড়ি |
গ্যাস প্ল্যান্ট | নামরূপ |
পাট উদ্যোগ | নুমালিগড় |
সার উদ্যোগ | শিলঘাট |
উত্তর:-
৪। পর্যাপ্ত পরিমাণে কাঁচামাল না থাকলেও যে কোন একটি স্থানে বড়ো উদ্যোগ গড়ে
উঠতে পারে সে বিষয়ে একটি দেশের উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর:- জাপানে উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচা মালের অভাব আছে। তবুও এর
উপকূল অঞ্চলে জাহাজ বন্দরগুলো গড়ে উঠার ফলে উদ্যোগেগুলোতে অন্য দেশ থেকে কাঁচা
মাল আমদানি করতে এবং উৎপাদিত সামগ্রী অন্য দেশে রপ্তানি করতে যথেষ্ট সুবিধা হয়।
৫। অসমে কেনো বেশি পরিমাণে বৃহৎ উদ্যোগ গড়ে ওঠেনি তার কারণ বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর:- অসমে বেশি পরিমাণে বৃহৎ উদ্যোগ গড়ে উঠেনি কারনগুলো হলো - প্রয়োজনীয়
মূলধন, বৃহৎ স্থানীয় বাজার, দক্ষ শ্রমিক, উন্নত যাতায়ত ব্যবস্থা ইত্যাদির অভাব।
৬। উদ্যোগ বলতে কি বোঝো? ভারতের চারটি বৃহৎ উদ্যোগের নাম লেখো।
উত্তর:- আমাদের প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস আছে যেগুলো আমরা প্রকৃতি থেকে প্রত্যক্ষ ভাবে পাই না।এই সামগ্রীগুলো প্ৰাকৃতিক সম্পদ থেকে যন্ত্রের সাহায্যে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়।এই ধরণের সামগ্রী যে স্থানে তৈরি করা হয় সেই স্থানকে উদ্যোগ বলা হয়।
ভারতের চারটি বৃহৎ উদ্যোগের নাম হলো ―
ক) চা ভারতের উদ্যোগ।
খ) চিনি উদ্যোগ।
গ) লোহা ও ইস্পাত উদ্যোগ এবং
ঘ) কার্পাস বস্ত্র উদ্যোগ।
সূচিপত্র | |
---|---|
পাঠ নং | পাঠের নাম |
১ | আমাদের পরিবেশ |
২ | জীব ও পরিবেশ |
৩ | আবহাওয়া |
৪ | জীবন ধারনের প্রণালি |
৫ | আহারের প্রয়োজনীয়তা |
৬ | অসমের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং সংরক্ষণ |
৭ | অসমের সংস্কৃতি |
৮ | দুর্যোগ ও আমরা |
৯ | পরিবেশ প্রদূষণ |
১০ | আমাদের উদ্যোগসমূহ |
১১ | আমাদের প্রতিষ্ঠানসমূহ |
১২ | আমাদের দেশ |
১৩ | ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং অসম |
১৪ | আমাদের সামাজিক সমস্যা |
১৫ | আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি |
১৬ | আমাদের প্রতিবেশি রাজ্যসমূহ |
৭। সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো-
উত্তর:-চিনি উদ্যোগ - চিনি উদ্যোগগুলো আখ উৎপন্ন স্থানের আশে-পাশে গড়ে উঠেছে। কারণ আখ শুকিয়ে গেলে তা থেকে রস বের করা কষ্টসাধ্য হয়।সেজন্য খেত থেকে কাঁচামাল তাড়াতাড়ি আনার জন্য পরিবহনের সুব্যবস্থার প্রয়োজন।এই শিল্পের উন্নত যন্ত্রপাতি ও দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন।
ভারতে ২০০-এর অধিক চিনি উদ্যোগ আছে।দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ চিনি উত্তর ভারতে উৎপন্ন হয়। কিন্তু দক্ষিণ ভারতের মাটি আখ চাষের জন্য অধিক উপযোগী হওয়ার নতুন চিনি উদ্যোগগুলো সেখানে স্থাপন করা হয়েছে। বিহার, উত্তর প্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাডু, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক ইত্যাদি রাজ্য চিনি উৎপন্ন করা হয়।অতি কম পরিমানে চিনি নিজের দেশে ব্যবহৃত হয়।অতি কম পরিমানে চিনি বিদেশে রপ্তানি করা হয়।
কাগজ উদ্যোগ - কাগজ উদ্যোগের প্রধান কাঁচামাল হল বাঁশ।বর্তমানে পৃথিবীতে কাগজের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় আজকাল পাইন,দেবদারু ইত্যাদি কোমল কাঠের মণ্ডের সাহায্য কাগজ তৈরি করা হয়।এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার ঘাস, পুরানো কাপড়, পাট গাছের আবর্জনা ইত্যাদি থেকেও কাগজ তৈরি করা হয়। তুলনামূলক ভাবে অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে কাগজ নির্মাণ উদ্যোগ খুব কম ভারতে প্রায় ৩২ টি কাগজ উদ্যোগ আছে এবং এর বেশিরভাগ কলকাতা ও মুম্বাই নগরের আশে-পাশে অবস্থিত।
কার্পাস বস্ত্র উদ্যোগ - প্রাচীন কাল থেকেই কার্পাস বস্ত্র তৈরিতে ভারতের সুনাম আছে। ভারতে এই শিল্প প্রথম হস্ত শিল্পের পর্যায়ে ছিল। বর্তমানে কার্পাস বস্ত্র উৎপাদনে ভারত পৃথিবীর মধ্য দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে আছে । মুম্বাই ভারতের আধুনিক বস্ত্র উদ্যোগের প্রদান কেন্দ্র । সেখানে যন্ত্র পাতি,কয়লা,উৎকৃষ্ট কার্পাস এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রী আমদানির জন্য বৃহৎ বন্দরের সুব্যবস্থা আছে। তদুপরি কার্পাস উৎপন্ন হওয়া অঞ্চলের সঙ্গে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, দক্ষ শ্রমিক, বৃহৎ স্থানীয় বাজার এবং জলবিদ্যুৎ সরবরাহের সুযোগ সুবিধা থাকার জন্য মুম্বাইয়ে এই উদ্যোগ গড়ে উঠেছে।
মুম্বাইয়ের পর আহমেদাবাদ হল ভারতের একটি উল্লেখযোগ্য কার্পাস বস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র।এই কেন্দ্র কার্পাস উৎপন্ন হওয়া অঞ্চলগুলোর মধ্য ভাগে অবস্থিত।পর্যাপ্ত মুলধন, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, দক্ষ শ্রমিক ইত্যাদির জন্য এই কেন্দ্র কার্পস বস্ত্র উদ্যোগ গড়ে উঠেছে। তাছাড়াও মহারাষ্ট্র, গুজরাট,মধ্যপ্রদেশ,উত্তরপ্রদেশ,পশ্চিমবঙ্গ ইত্যাদি রাজ্য অনেক কার্পাস বস্ত্র উদ্যোগ আছে।
রেশম উদ্যোগ - তুঁত গাছের পাতা শূককীটের খাদ্য।তুত গাছের চাষ করে শূককীট পালন করা হয়। কীট নিঃসৃত লালা থেকে রেশম সুতো বের করে রেশম বা পাটের কাপড় তৈরি করা হয়। এভাবে সুতো তৈরি করার পদ্ধতি খুবই জটিল।এর জন্য কঠোর শ্রম ও কৌশলের প্রয়োজন।এই শিল্প প্রথমে কুটির শিল্প হিসাবে গড়ে উঠেছিল ।
আজকাল মেসিনের সাহায্য সেই কাপড় তৈরি করা হয়। রেশম কাপড় উৎপাদিনকারী দেশগুলোর মধ্যে ভারত পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে আছে। দেশের মোট উৎপাদনের অর্ধেক কর্ণাটকে হয়।কর্ণাটক রাজ্যের ব্যাঙ্গালুরু ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও বিষ্ণুপুর, তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরাম,কাশ্মীরের শ্রীনগর,উত্তর প্রদেশের বেনারস, অসমের শুয়ালকুচি,ধকুয়াখানা, রহা,পলাশবাড়ী, গুজরাটের গান্ধীনগর ইত্যাদি রেশম শিল্পের সুপ্রসিদ্ধ কেন্দ্র।
লোহা ও ইস্পাত উদ্যোগ - লোহা ও ইস্পাত উদ্যোগ ভারতে অন্যতম বৃহৎ উদ্যোগ। অনেক আগে থেকেই ভারতে ইস্পাত উদ্যোগ আছে। এই উদ্যোগের জন্য কাঁচামাল হিসেবে আকরিক লোহা,কয়লা ও চুনপাথর আবশ্যক। বেশি ওজন এবং আয়তনের কাঁচামাল প্রয়োজন হওয়ার জন্য এই উদ্যোসাধারণত লোহার খনির আশে পাশে গড়ে উঠে।তদুপরি এই উদ্যোগের উৎপাদিত ভারী সামগ্রী পরিবহনের জন্য উন্নত যাতায়ত ব্যবস্থার প্রয়োজন। এই উদ্যোগের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও সাজ-সরঞ্জাম নির্মাণের উদ্যোগসমূহ গড়ে উঠেছে। লোহা ও ইস্পাত উদ্যোগের জন্য প্রধানত বৃহৎ পরিমানের মূলধন,উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা, প্রচুর ইন্ধন এবং কাঁচামালের প্রয়োজন। সেজন্য ছোটোনাগপুর মালভূমির অন্তর্গত পশ্চিমবঙ্গ,ঝড়খণ্ড,বিহার, ওড়িশা ছত্তিশগড় অঞ্চলে লোহা ও ইস্পাত উদ্যোগের কেন্দ্রস্থল রয়েছে।
উল্লিখিত উদ্যোগগুলো ছাড়াও আমাদের দেশে আরো অনেক বৃহৎ উদ্যোগ আছে।একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে উদ্যোগসমূহ যথেষ্ট অবদান যোগায়।একটি উদ্যোগ গড়ে উঠার সঙ্গে সঙ্গে সেই অঞ্চলের যাতায়াত ও পরিবহন ব্যবস্থাও উন্নত হয় এবং উৎপাদিত সামগ্রিগুলো কেনা-বেচার জন্য স্থানীয় বাজার গড়ে উঠে । স্থানীয় লোকেরা এই উদ্যোগগুলোতে কর্মসংস্থান পায়।