অসমের প্রাকৃতিক সম্পদ ও সেগুলোর সংরক্ষণ

অসমের প্রাকৃতিক সম্পদ ও সেগুলোর সংরক্ষণ (পাঠ-৬)

অসমের প্রাকৃতিক সম্পদ ও সেগুলোর সংরক্ষণ (পাঠ-৬), Class V Environment Science Lesson 6. Class 5 EVS .

অসমের প্রাকৃতিক সম্পদ ও সেগুলোর সংরক্ষণ পাঠের অনুশীলনীর প্রশ্ন উত্তর

১। উত্তর লেখো

(ক) প্রাকৃতিক সম্পদ বলতে কী বোঝো?
উত্তর:- প্রকৃতি থেকে বিভিন্ন সামগ্রী আহরণ করে যখন মানুষের বিভিন্ন কাজের জন্য ব্যবহারের উপযোগী করে নেওয়া হয় তখনই তাকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলা হয়৷

(খ) নবীকরণযোগ্য এবং অনবীকরণযোগ্য সম্পদ বলতে কী বোঝো?
উত্তর:- বায়ু, মাটি, উদ্ভিদ, সৌরশক্তি ইত্যাদি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করলেও শেষ হয় না। এই ধরনের সম্পদগুলোই হচ্ছে নবীকরণযোগ্য সম্পদ।

আবার কিছু কিছু প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন- কয়লা, খনিজ পদার্থ, খনিজ তেল ইত্যাদি একবার আহরণ করে ব্যবহার করার পর এই সম্পদ পুনরায় সৃষ্টি হতে বহু নিযুত বছর সময় লাগে৷ এইগুলোই হচ্ছে অনবীকরণযোগ্য সম্পদ।

(গ) অসমের রাষ্ট্রীয় উদ্যানগুলোর নাম লেখো।
উত্তর:- অসমের রাষ্ট্রীয় উদ্যানগুলোর নাম হল – কাজিরাঙা রাষ্ট্রীয় উদ্যান, মানস রাষ্ট্রীয় উদ্যান, নামেরি রাষ্ট্রীয় উদ্যান, ডিব্রু-সৈখোয়া রাষ্ট্রীয় উদ্যান, ওরাং রাষ্ট্রীয় উদ্যান, রাইমনা রাষ্ট্রীয় উদ্যান, দিহিং-পাটকাই রাষ্ট্রীয় উদ্যান।

(ঘ) অসমের কোন কোন জেলাতে চুনাপাথর পাওয়া যায়?
উত্তর:- অসমের ডিমাহাসাও এবং কার্বি আংলং জেলাতে চুনাপাথর পাওয়া যায়।

(ঙ) অসমের বনাঞ্চলে উপলব্ধ চার প্রকার প্রাণীর নাম উল্লেখ করো ।
উত্তর:- অসমের বনাঞ্চলে উপলব্ধ চার প্রকার প্রাণীর নাম – গণ্ডার, হাতি, ডোরাকাটা বাঘ, বুনো মহিষ, চিতাবাঘ, হরিণ, বন্যশূকর, বুনো গরু, ভালুক, বুনো মহিষ, শিয়াল, উল্লুক, সোনালি বানর ইত্যাদি।

২। টীকা লেখো-

(ক) অভয়ারণ্য
(খ) সংরক্ষিত বনাঞ্চল
(গ) উদ্ভিদ উদ্যান
(ঘ) রাষ্ট্রীয় উদ্যান

উত্তর:-

(ক) অভয়ারণ্য :- জৈব-বৈচিত্র্যের ওপর ভিত্তি করে সরকার প্রাকৃতিকভাবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এক একটি এলাকাকে অভয়ারণ্য বলে ঘোষণা করে। অভয়ারণ্য মানুষের ঘন বসতি এলাকা থেকে অনেক দূরে অবস্থিত।
এখানে. বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদকে বিশেষভাবে রক্ষণাবেক্ষণ দেওয়া হয়। এখানে বন্যপ্রাণীরা নির্ভয়ে বিচরণ করতে
পারে। অভয়ারণ্যের গাছ যাতে বিনা অনুমতিতে কেউ কাটতে না পারে সে দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখা হয়।

(খ) সংরক্ষিত বনাঞ্চল :- সংরক্ষিত অঞ্চল যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ দর্শনার্থীদের সহজে চেনার উদ্দেশ্যে প্রত্যেকটি উদ্ভিদের গায়ে স্থানীয় নামের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক নামের ফলকও লাগানো থাকে৷ তাছাড়াও রাষ্ট্রীয় উদ্যানের একেবারে ভেতরের অঞ্চলটি বন্যপ্রাণীর জন্য সংরক্ষিত । এই সংরক্ষিত অঞ্চলগুলোয় দেশ-বিদেশের যে পর্যটকরা আসেন সরকার তাদের কাছ থেকে কর আদায় করে।

(গ) উদ্ভিদ উদ্যান :- উদ্ভিদ উদ্যান হল এমন একধরনের সংরক্ষিত অঞ্চল যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ সংরক্ষণ করে রাখা হয়। এই উদ্ভিদ উদ্যানের উদ্ভিদ দর্শনার্থীদের সহজে চেনার উদ্দেশ্যে প্রত্যেকটি উদ্ভিদের গায়ে স্থানীয় নামের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক নামের ফলকও লাগান থাকে। ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে ভ্রমণ করে উত্তিদ সম্পর্কীয় বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে। এই উদ্ভিদ উদ্যানগুলো দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটক আসেন । আমাদের রাজ্যের গুয়াহাটি চিড়িয়াখানার ভেতরেও উদ্ভিদ উদ্যান আছে।

(ঘ) রাষ্ট্রীয় উদ্যান :- প্রত্যেকটি স্বাধীন দেশের নিজ নিজ রাষ্ট্রীয় উদ্যান থাকে। একটি দেশে একের চেয়েও বেশি রাষ্ট্রীয় উদ্যান থাকতে পারে। রাষ্ট্রীয় উদ্যানগুলোকে বিশেষভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। কাজিরাঙা রাষ্ট্রীয় উদ্যানে এক খড়গ বিশিষ্ট গন্ডারের সংরক্ষণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।মানস, ও নামেরি রাষ্ট্রীয় উদ্যানে বাঘের সুরক্ষা ও সংরক্ষণের জন্য ব্যাঘ্র প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয় উদ্যানগুলোকে সাধারণত একেবারে ভেতরের এবং আশে পাশের অঞ্চল হিসেবে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়।

৩। শূন্যস্থান পূরণ করো –

(ক) ২১ মার্চ দিনটিকে ……………. হিসাবে পালন করা হয়।
উত্তর:- বিশ্ব বন দিবস ।

(খ) প্রাকৃতিকভাবে লব্ধ সকল সামগ্রী
……………….. নয়।
উত্তর:- সম্পদ ৷

(গ) ………………. এর কয়লাখনি খুব পুরোনো।
উত্তর:- মাকুম ।

(ঘ) সিমেন্ট প্রস্তুত করতে …………… ব্যবহার করা হয়।
উত্তর:- চুনাপাথর ৷

(ঙ) ……………. ও ……………… অসমের দুটি প্রধান নদী৷
উত্তর:- বরাক ও ব্রহ্মপুত্র ৷

৪। জৈবসম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে লেখো।

উত্তর:- বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, প্রদূষণ ইত্যাদির ফলে জীব ও সম্পদের ধ্বংস হতে দেখা যায়৷ তারজন্য বর্তমান আধুনিকীকরণ এবং উদ্যোগীকরণের যুগে জৈবসম্পদ ক্রমে ক্রমে ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

জৈবসম্পদ সংরক্ষণের মধ্যে অন্যতম হলো – ভূমি সংরক্ষণ, অরণ্য সংরক্ষণ।

ভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা – ভূমি বা মাটি ক্ষয়রোধে মাটিতে বৃক্ষরোপণ করে মাটির ক্ষয় থেকে সুরক্ষিত রাখা। তাছাড়া, মাটিতে পচন সার ব্যবহার করে মাটির কোনোরূপ ক্ষতি না করে মাটির উর্বরতা ঠিক করতে পারি৷ মাটির সংরক্ষণ না করলে ভূমিস্খলন হবে।

অরণ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা – বন বা অরণ্য উদ্ভিদ এবং প্রাণীর বাসভূমি, পৃথিবীতে গাছ এবং প্রাণী থাকলেই মানুষের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ থাকবে, সেজন্য বনজ সম্পদকে সংরক্ষিত করে রাখা দরকার। যেমন – সংরক্ষিত বনাঞ্চল, অভয়ারণ্য, রাষ্ট্রীয় উদ্যান, পক্ষী উদ্যান হিসাবে সংরক্ষিত করে রাখা। কোনো একটি অঞ্চল বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল হিসাবে বিবেচিত হলে খাদ্য, জল এবং বাসস্থানের প্রয়োজন। এই তিনটি সঠিকভাবে থাকলেই জৈব বৈচিত্র‍্যের সৃষ্টি হয়৷

৫। পরিবেশ সজাগতা আনবার জন্য তিন প্রকার ব্যবস্থার উল্লেখকরো।

উত্তর:- পরিবেশ সজাগতা আনবার জন্য তিন প্রকার ব্যবস্থা –

(ক) গাছের চারারোপণ কার্যসূচির দ্বারা ২১ মার্চ থেকে সাতদিন ধরে ‘বিশ্ব বন দিবস’ হিসাবে উদযাপিত হয়৷ এই কার্যসূচিতে বৃক্ষরোপন করা হয় এবং জনসাধারণের মধ্যে বৃক্ষের যত্ন নেওয়ার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়।

(খ) ২২ মার্চ দিনটি ‘বিশ্ব জল দিবস’ হিসাবে পালন করা হয়৷ জলের সংরক্ষণ, সুরক্ষা এবং সঠিক ব্যবহারের বিষয়ে সজাগতা আনবার জন্য সভা-সমিতি করা হয়৷

(গ) ২২ মে দিনটি ‘বিশ্ব জৈব বৈচিত্র্য দিবস’ হিসাবে পালন করা হয়৷

৬। শুদ্ধ উত্তর বেছে লেখো।

(ক) নীচের কোনটি রাষ্ট্রীয় উদ্যান

(১) রাইমনা (২) গরমপানি (৩) পবিতরা

উত্তর:- রাইমনা ।

(খ) নীচের কোন পাখিটি অসমের রাজ্য পাখি?

(১) ময়না (২) ময়ূর (৩) ধনেশ (৪) দেওহাঁস।

উত্তর:- দেওহাঁস।

পরবর্তী পাঠের প্রশ্ন উত্তর পাঠ-৭ অসমের সংস্কৃতি

error: Content is protected !!