(toc)
পাঠ-১২
উদ্যোগ
Class 5 Environment Assam Lesson 12, পাঠ-১২ উদ্যোগ Assam SCERT Board all notes in Bengali Medium. পঞ্চম শ্রেণীর পরিবেশ আসাম বাংলা মাধ্যম।
১। সংক্ষেপে উত্তর দাও
(ক) কাঁচামাল বলতে কী বোঝ?
উত্তর:- প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত যেগুলো সামগ্রী ব্যবহার করে আমাদের প্রয়োজনীয় বস্তু তৈরী করা হয়, সেগুলোকে কাচাঁঁসামগ্রী বা কাঁচামাল বলা হয়।
খ) উদ্যোগ গড়ে তোলার জন্য কেন উন্নত যাতায়াত ও পরিবহণের প্রয়োজন হয়?
উত্তর:-অসমের স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত উদ্যোগগুলোতে উৎপাদিত সামগ্রীগুলো যেমন- চা-পাতা, পাট-মূগার কাপড় দেশ-বিদেশে স্থান পেয়েছে। তাই এই উদ্যোগগুলো আরও উন্নত মানে গড়ে তোলার জন্য উন্নত যাতায়াত ও পরিবহনের প্রয়োজম হয়।
(গ) উদ্যোগ গড়ে উঠার জন্য কী কী প্রয়োজন লেখো।
উত্তর:-উদ্যোগ গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় মূলধন, বৃহৎ স্থানীয় বাজার, দক্ষ শ্রমিক, উন্নত মানের যাতায়াত ব্যবস্থা ইত্যাদি।
(ঘ) লোহা ও ইস্পাত উদ্যোগের জন্য কী কী কাচাঁমাল প্রয়োজন?
উত্তর:-লোহা ও ইস্পাত উদ্যোগের জন্য আকরিক লোহা, কয়লা ও চুনাপাথর ইত্যাদি কাঁচামাল প্রয়োজন।
(ঙ) পাটের কাপড় কী ভাবে তৈরি করা হয়?
উত্তর:-তুঁত গাছ হলো শূককীটের প্রধান খাদ্য। তুঁত গাছের চাষ করে শূককীট পালন করা হয়। কীট নিঃসৃত লালা থেকে রেশম সূতো বের করে রেশম বা পাটের কাপড় তৈরি করা হয়।
২। শূণ্যস্থান পূর্ণ করো –
(ক) মুম্বাই ভারতের আধুনিক…… উদ্যোগের প্রধান কেন্দ্র।
উত্তর:- কার্পাস
(খ) কাগজ উদ্যোগের প্রধান কাচামাল হল….. ৷
উত্তর:- বাঁশ
(গ) ভারতের সবচেয়ে বেশি রেশম কাপড়….. রাজ্যে উৎপন্ন করা হয়।
উত্তর:- কর্ণাটক
(ঙ) চিনি উদ্যোগের প্রধান কাচামাল হল….. |
উত্তর:- আঁখ
৩। নীচের বাক্যগুলো থেকে অশুদ্ধগুলো বেছে শুদ্ধ করে লেখো –
(ক) সব স্থানে এড়ি ও মুগা কাপড় উৎপন্ন হয়।
উত্তর:- অশুদ্ধ
(খ) বিভিন্ন ধরনের ঘাস ও কোমল কাঠের খণ্ড থেকে কাগজ উৎপন্ন করা হয়।
উত্তর:- শুদ্ধ
(গ) উদ্যোগ ক্ষেত্রে উৎপন্ন সামগ্রীর চাহিদা দেশ -বিদেশের বাজারে থাকতে হবে।
উত্তর:- শুদ্ধ
(ঘ) মুম্বাই-এর পর গুজরাট ভারতের একটি উল্লেখযোগ্য কার্পাস বস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র ৷
উত্তর:- অশুদ্ধ
৪। “ক” অংশের সঙ্গে ‘খ’ অংশ মেলাও –
উত্তর:-
৫। কাঁচামাল না থাকলেও যে কোন একটি স্থানে বড়ো উদ্যোগ গড়ে উঠতে পারে সে বিষয়ে একটি দেশের উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর:-কাচাঁমাল না থাকলেও যেখানেও যেকোন একটি স্থানে বড়ো উদ্যোগ গড়ে উঠতে পারে। উদাহরস্বরুপে-জাপান একটি ছোট দেশ এবং উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালেরও অভাব। তথাপিও এই দেশ উদ্যোগ ক্ষেত্রে অগ্রসর। এর প্রধান কারণ হলো উপকূল অঞ্চলে জাহাজ বন্দর গুলো গড়ে উঠার জন্য উদ্যোগগুলোতে অন্য দেশের থেকে কাচাঁমাল আমদানি এবং উৎপাদিত সামগ্রী অন্য দেশে রপ্তানি করতে যথেষ্ট সুবিধা হয়। পাহাড় -পর্বতের উপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোতে স্রোত বেশি হওয়ার জন্য খুব কম খরচে জল বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। এই কারণে জাপানে লোহার খনি কম থাকার সত্ত্বেও ইস্পাত উৎপাদনে পৃথিবীতে প্রথম সারির দেশে পরিগণিত হয়েছে। এমনকি ইস্পাত উৎপাদন করে জাপান অন্য দেশে রপ্তানি করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে থাকে।
৬। অসমে কেন বেশি পরিমাণে বৃহৎ উদ্যোগ গড়ে উঠেনি তার কারণগুলো বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর:-অসমে বেশি পরিমাণে বৃহৎ উদ্যোগ গড়ে না উঠার কারণ গুলো হলো প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাব, বৃহৎ স্থানীয় বাজার, দক্ষ শ্রমিক, উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা ইত্যাদি।
যেকোন একটি নির্দিষ্ট স্থানে উপযুক্ত কাচামালের ব্যবস্থার উপরে স্থানটির উদ্যোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠে। সেজন্য প্রাকৃতিক সম্পদ সমৃদ্ধ অঞ্চলে উদ্যোগ ব্যবস্থা সহজে গড়ে উঠে। প্রাকৃতিক সম্পদ মজুত থাকলেও কোনো জায়গায় উদ্যোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠা সম্ভব নাও হতে পারে, যদি না সেখানে উপযুক্ত মূলধন, উন্নত যন্ত্রপাতি, দক্ষ শ্রমিক উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা ইত্যাদি না থাকে। কারণ উদ্যোগ গড়ে উঠতে এসব উপাদানের প্রয়োজন হয়ে থাকে।
৭ | উদ্যোগ বলতে কী বোঝ? ভারতে চারটি বৃহৎ উদ্যোগের নাম লেখো।
উত্তর:- বনজ সম্পদ, জলজ সম্পদ, কৃষিযাত সসম্পদ ইত্যাদি প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে আমরা সাধারণত কিছু সামগ্রী প্রত্যক্ষ পেয়ে থাকি। আমাদের প্রয়োজনীয় আরও কিছু সামগ্রী আছে যেগুলো আমরা প্রকৃতি থেকে প্রত্যক্ষ ভাবে পাই না। এই সামগ্রী গুলো প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে যন্ত্রের সাহায্যে বিশেষ পদ্ধতি প্রয়োগ করে তৈরী করা হয়। এধরনের সামগ্রী প্রস্তুত করার জন্য এক একটি উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে উঠে। এগুলোকে উদ্যোগ বলা হয়। ভারতের চারটি বৃহৎ উদ্যোগ হলো- সূতো থেকে কাপড়, পাট থেকে কার্পেট, ব্যাগ আদি, বাঁশ থেকে কাগজ, চুনাপাথর থেকে সিমেন্ট ইত্যাদি উদ্যোগ।
৮। সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ-
চিনি উদ্যোগ,কাগজ উদ্যোগ, কার্পাস বস্ত্র উদ্যোগ, রেশম উদ্যোগ, লোহা ও ইস্পাত উদ্যোগ।
উত্তর:- চিনি উদ্যোগ :- চিনি উদ্যোগ আখ উৎপাদিত অঞ্চলে বেশি করে গড়ে উঠে। কেননা আখ শুকিয়ে গেলে রস বের করে চিনি প্রস্তত করা হয়। এই উদ্যোগের জন্য উন্নত মানের যন্ত্রপাতি ও দক্ষ শ্রমিকের আবশ্যক।
বভারতে প্রায় ২০০ টি চিনির কল আছে। দেশের প্রায় ৬০% চিনি উত্তর ভারতে উৎপন্ন হয়ে থাকে। কিন্তু দক্ষিণ ভারতের মাটি আখ চাষের জন্য অধিক উপযোগী হওয়ার জন্য নতুন চিনি উদ্যোগগুলো সেখানে স্থাপন করা হয়েছে। বিহার, উত্তর প্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, ককর্ণাটক ইত্যাদি রাজ্যে চিনি উৎপাদন করা হয়। আমাদের দেশে উৎপন্ন চিনির বেশির ভাগই আমাদের দেশেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিদেশে খুব কম পরিমাণে রপ্তানি করা হয়।
কাগজ উদ্যোগ :- কাগজ উদ্যোগের প্রধান কাচাঁমাল হলো বাঁশ। বর্তমানে পৃথিবীতে কাগজের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার আজকাল পাইন, দেবদারু ইত্যাদি কোমল কাঠের মন্ডের সাহায্যে কাগজ তৈরী করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার ঘাস, পুরনো কাপড়, পাট গাছের আবর্জনা থেকেও কাগজ তৈরী করা হয়। তুলনামূলক ভাবে অন্য অন্য দেশের তুলনায় ভারতের কাগজের উৎপাদনের পরিমাণ কম। ভারতে প্রায় ৩২ টি কাগজ উদ্যোগ আছে, যা কলকাতা ও মুম্বাইতে বেশির ভাগ রয়েছে।
কার্পাস বস্ত্র উদ্যোগ :- প্রাচীন কাল থেকেই ভারতে কার্পাস বস্ত্র তৈরীতে ভারতের সুনাম আছে। ভারতে এই শিল্প প্রথমে হস্ত শিল্পের পর্যায়ে ছিল। বর্তমান কার্পাস উৎপাদনে ভারত পৃথিবীর দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। মুম্বাই ভারতের আধুনিক বস্ত্র উউদ্যোগের প্রধান কেন্দ্র। সেখানে যন্ত্রপাতি, কয়লা, উৎকৃষ্ট কার্পাস এবং আনুষঙ্গিক সামগ্রী আমদানির জন্য বৃহৎ সুব্যবস্থা আছে। তদুপরি কার্পাস উৎপাদন অঞ্চলের সংঙ্গে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, দক্ষ শ্রমিক, বৃহৎ স্থানীয় বাজার এবং জলবিদ্যুৎ সরবরাহের সুযোগ সুবিধা থাকার জন্য মুম্বাইয়ে এই উদ্যোগ গড়ে উঠেছে।
মুম্বাইয়ের পর আমেদাবাদ হলো ভারতের এক উল্লেখযোগ্য কার্পাস উৎপাদনের কেন্দ্র তাছাড়াও মহারাষ্ট্র, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ইত্যাদি রাজ্যে অনেক কার্পাস বস্ত্র উৎপাদন হয়।
রেশম উদ্যোগ :- তুঁত গাছের পাতা শূককীটের খাদ্য। ফলে তুঁত গাছের চাষ করে শূককীট পালন করা হয়। কীট নিঃসৃত লালা থেকে রেশম বা পাটের কাপড় তৈরি করা হয়। এভাবে সূতো তৈরী করার পদ্ধতি খুবই জটিল। এর জন্য কঠোর শ্রম ও কৌশলের প্রয়োজন। তাই এই শিল্প প্রথমে কুটীর শিল্প হিসেবে গড়ে উঠে ছিল। আজকাল মেসিনের সাহায্যে এই পাটের কাপড় তৈরি করা হয়।
রেশম কাপড় উৎপাদনে ভারত পৃথিবীর দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। দেশের মোট রেশম উৎপাদনের অর্ধেকই কর্ণাটক এ উৎপাদন হয়। এছাড়া পশ্চিমবংঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও বিষ্ণুপুর, তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরম, কাশ্মীরের শ্রীনগর, উত্তরপ্রদেশের বেনারস, অসমের শুয়ালকুচি, ঢকুয়াখানা, রহা, পপলাশবাড়ী, গুজরাটের গান্ধীনগর ইত্যাদি রেশম উৎপাদনের সুপ্রসিদ্ধ স্থান।
লোহা ও ইস্পাত উদ্যোগ :- লোহা ও ইস্পাত উদ্যোগ ভারতের অন্যতম প্রধান উদ্যোগ। এই উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় কাচাঁমাল গুলো হলো আকরিক লোহা, কয়লা ও চুনাপাথর ইত্যাদি। বেশি ওজন ও আয়তনের কাচাঁমালের প্রয়োজন হওয়ার জন্য এই উদ্যোগ সাধারণত লোহার খনির আশেপাশে গড়ে উঠে। তদুপরি এই উদ্যোগের উৎপাদিত ভারী সামগ্রী পরিবহনের জন্য উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়। এই উদ্যোগের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও সাজ-সরঞ্জাম নির্মাণের উদ্যোগ গড়ে উঠেছে। লোহা-ইস্পাতের উদ্যোগ প্রধানত বৃহৎ পরিমানের মূলধন, উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা, প্রচুর ইন্ধন ও কাচাঁমালের প্রয়োজন। এই উদ্যোগ সাধারণত নাগপুর, পশ্চিমবংগ, ঝারখন্ড, বিহার, ছত্তিসগড় ও ওড়িশা ইত্যাদি অঞ্চলে কেন্দ্রস্থল রয়েছে।