নেপাল আর গোপাল Class IV Bengali Question Answer Lesson 6
নেপাল আর গোপাল পাঠের প্রশ্ন উত্তর
ক্রিয়াকলাপ
ক — পাঠভিত্তিক
গল্পটি পড়ে নিজের মতো করে বলো।
উত্তরঃ সারাংশ দেখো।
গল্পে যে শব্দগুলো তুমি বুঝতে পারনি সেগুলোর নীচে দাগ দাও এবং অর্থ জেনে নাও।
নীচের উক্তিগুলো কে কাকে বলেছিল, বলো।
(ক) “প্রথমে ছেঁড়া কাঁথাটি ভাগ করি, এসো।”
উত্তরঃ এই উক্তিটি বড় ভাই নেপাল তার ছোট ভাই গোপালকে বলেছিল।
(খ) “কী করব, দাদা যে আমার চেয়ে বড়ো।”
উত্তরঃ গোপাল এই উক্তিটি বুড়িমাকে বলেছিল।
(গ) “বাবা, তুমি কষ্ট করছ কেন?”
উত্তরঃ একথা বুড়িমা গোপালকে বলেছিল।
(ঘ) নেপাল ও গোপালের পূর্বপুরুষের সম্পত্তি বলতে কী কী ছিল?
উত্তরঃ ছেঁড়া কাঁথা, বাগানে কয়েকটি ফলন্ত গাছ ও শ্যামলী নামে একটি গাই।
নীচের উত্তরগুলো বলো ও লেখো।
(ক) নেপাল ও গোপাল কার সম্পত্তি ভাগ করে নিয়েছিল?
উত্তরঃ নেপাল ও গোপাল পূর্বপুরুষের সম্পত্তি ভাগ করে নিয়েছিল।
(খ) কীভাবে নেপাল ও গোপাল ছেঁড়া কাঁথাটি ভাগাভাগি করেছিল?
উত্তরঃ শীতকালের রাতে ছেঁড়া কাঁথাটি নেপাল ব্যবহার করবে আর দিনের বেলায় গোপাল ব্যবহার করবে। এমন শর্তে নেপাল ও গোপাল নিজেদের মধ্যে কাঁথাটি ভাগাভাগি করেছিল।
(গ) গোপালে দুঃখ দেখে পাশের বাড়ির বুড়িমা কী বলেছিলেন?
উত্তরঃ গোপালের দুঃখ দেখে পাশের বাড়ির বুড়িমা গোপালকে বলেছিলেন, “এত কষ্ট করছ কেন?”
(ঘ) বুড়িমার কথামতো গোপাল কী করেছিল?
উত্তরঃ বুড়িমার কথামতো গোপাল দিনের বেলায় কাঁথাটি ভিজিয়ে রেখে দেয়। এরপর নেপাল যখন ফলন্ত গাছে ফল পাড়তে উঠে গোপাল তখন নীচে কুড়োল দিয়ে গাছের গুড়ি কাটতে উদ্যত হয়। আবার যখন গাইয়ের দুধ দোয়াতে যায় গোপাল তখন গাইটির কানে সুড়সুড়ি দেওয়ায় নেপাল আর দুধ দোয়াত
(ক) নেপাল আর গোপাল ___________।
উত্তরঃ নেপাল আর গোপাল দুইভাই।
(খ) গোপাল ___________ রাতে কাঁপতে থাকে।
উত্তরঃ গোপাল শীতের রাতে কাঁপতে থাকে।
(গ) গোপাল ___________ জল, সার দেয় আর নেপাল ___________ চার ফল খায়।
উত্তরঃ গোপাল গাছের গোড়ায় জল, সার দেয় আর নেপাল মহানন্দে তার ফল খায়।
(ঘ) ছোটোভাই ___________ যত্ন করে খাওয়ায় আর বড়োভাই মজা করে তার দুধ খায়।
উত্তরঃ ছোটো ভাই শ্যামলীকে যত্ন করে খাওয়ায় আর বড়ো ভাই মজা করে তার দুধ খায় ৷
(ঙ) দুই ভাই ___________ সুখে দিন কাটাতে লাগল।
উত্তরঃ দুই ভাই মিলেমিশে সুখে দিন কাটাতে লাগল ।
খ—ভাষা অধ্যয়ন (ব্যবহারিক ব্যাকরণ)
পাঠে তোমরা ‘ফলন্ত গাছের’ কথা পেয়েছ। ‘ফলন্ত গাছের’ অর্থ হল ‘ফল ধরে এমন’ গাছ’ বা ‘ফল দিয়েছে এমন গাছ।’ ঠিক এরকমভাবে আরও কয়েকটি শব্দ ও তার অর্থ এসো, জেনে নিই।
চলন্ত – গতিশীল বা চলছে এমন কোনো কিছু, যেমন- চলন্ত গাড়ি।
ফুটন্ত – ফুটে চলেছে এমন কোনো কিছু, যেমন- ফুলন্ত জল।
পড়ন্ত – পড়ে আসছে বা কমে আসছে এমন, যেমন- পড়ন্ত রোদ।
জ্বলন্ত – জ্বলছে এমন, যেমন- জ্বলন্ত কয়লা।
এবার এরকম আরও কয়েকটি শব্দের অর্থ জেনে বাক্য রচনা করো।
ছুটন্ত, ঝুলন্ত, ঘুমন্ত, জীবন্ত, বাড়ন্ত, ডুবন্ত
উত্তরঃ ছুটন্ত (ছুটছে এমন কোনো কিছু) – ছুটন্ত ষাঁড়ের সামনে দাঁড়িও না।
ঝুলন্ত (ঝুলছে এমন কোনো কিছু।) – ছেলেটি ঝুলন্ত আমটি পাড়ার চেষ্টা করছিল।
ঘুমন্ত (ঘুমোচ্ছে এমন কোনো কিছু।) – ঘুমন্ত শিশুটিকে জাগিও না।
জীবন্ত (জীবিত আছে এমন কোনো কিছু।) – মাছুটি ডাঙাতেও জীবিত আছে।
বাড়ন্ত (বাড়ছে এমন কোনো কিছু।) – বাড়ন্ত গাছটিতে জল দাও।
ডুবন্ত (ডুবে যাচ্ছে এমন কোনো কিছু।) – ডুবন্ত শিশুকে বাঁচিয়ে সে পুরষ্কার পেয়েছিল।
পাঠে ‘পাকা ফল’, ‘ছেঁড়া কাঁথা’, ‘বড়ো ভাই’ ইত্যাদি শব্দগুলোতে ‘পাকা’, ‘ছেঁড়া’, ‘বড়ো’ শব্দগুলো, দোষ, গুণ রকম ইত্যাদি অর্থ বোঝায়। এই শব্দগুলো পাশের শব্দগুলোকে যেমন ‘ফল’, ‘কাঁথা’, ‘ভাই’ কে বিশেষিত করেছে। এভাবে একটি পদ অন্য একটি পদের শেষ গুণ বোঝালে তাকে বিশেষণ পদ বলা হয়।(alert-success)
শিক্ষকের সাহায্যে পাঠে অন্যান্য বিশেষণ পদগুলো খুঁজে বের করো এবং খাতায় লেখো।
উত্তরঃ বড়ো, ছোট, ছেঁড়া, অন্ধকার, ভেজা, পাকা, ভালো, দারুণ। পাঠে বড়ো, দিন, আগা, সুখ ইত্যাদি শব্দগুলোর সাথে এদের বিপরীত শব্দও রয়েছে। ‘বড়োর বিপরীতার্থক শব্দ ‘ছোটো’, ‘সুখ’ এর বিপরীতার্থক শব্দ ‘দুঃখ’, দিন-এর বিপরীতার্থক শব্দ ‘রাত’, আগার বিপরীতার্থক শব্দ ‘গোড়া’।
এবার নীচের শব্দগুলোর বিপরীতার্থক শব্দ কী হবে ভেবে বলো ও লেখো।
সম্মতি, শুকনো, শীতকাল, আরাম, রাজি, সামনে, চালাকি
উত্তরঃ সম্মতি – অসম্মতি।
শীতকাল – গরমকাল।
রাজি – নারাজ।
শুকনো – ভিজে।
আরাম – ক্লেশ।
সামনে – পিছনে।
চালাকি – বোকামি।
যুক্তবর্ণ গঠন করো ও শব্দ লেখো:
উত্তরঃ জ্র – জ এ র
ষ্ট – ষ এ ট
ন্ধ – ন এ ধ
জ্র – বজ্র
ষ্ট – কষ্ট
ন্ধ – বন্ধ, অন্ধকার
পাঠে দেওয়া আরও কয়েকটি যুক্তবর্ণের গঠন দেখাও ও শব্দ লেখো :
উত্তরঃ ম্প – ম এ প
ম্ম – ম এ ম
ণ্ড – ণ এ ড
ন্দ – ন এ দ
ত্ন – ত এ ন
দ্ধ – দ এ ধ
ব্দ – ব এ দ
ম্প – সম্পত্তি
ম্ম – সম্মতি
ণ্ড – প্রচণ্ড
ন্দ – মহানন্দে
ত্ন – যত্ন
দ্ধ – বুদ্ধি
ব্দ – জব্দ
নীচে ‘জ’, ‘ণ্ড’, ষ্ট, ন্ধ এই যুক্তবর্ণগুলো দিয়ে কিছু শব্দ গঠন করো:
উত্তরঃ বজ্র, প্রচণ্ড, কষ্ট, অন্ধ, বজ্রপাত, প্রকাণ্ড, নষ্ট, অন্ধকার, বজ্রপাত, ব্রহ্মাণ্ড, আড়ষ্ট, সন্ধি।
এসো, যুক্তবর্ণ ভেঙে লিখি : ড্র, ন্ধ, শু, ন্ড
উত্তরঃ জ্র জ + র = জ্র
ন্ধ ন + ধ = ন্ধ
শ্চ শ + চ = শ্চ
ণ্ড ণ + ড = ণ্ড
‘এসব দেখে গোপালের মাথায় যেন বজ্রপাত হল’
এখানে ‘মাথায় বজ্রপাত’ বলতে সর্বনাশ হওয়াকে বোঝান হয়েছে। ভাষায় এ ধরনের ব্যবহার বাগ্বিধি বা বাগ্ধারার অন্তর্গত। এভাবে ‘মাথা’ পদটি দিয়ে কয়েকটি বাগবিধি হলো –
মাথা মোটা – কমবুদ্ধি।
মাথায় ওঠা – বেশি প্রশ্রয় পাওয়া।
মাথা ঠেকান – প্রণাম ও শ্রদ্ধা করা।
মাথা হেট করা – লজ্জিত হওয়া।
মাথা উঁচু করা – সম্মান বজায় রাখা।
মাথা ঘামানো – চিন্তা ভাবনা করা।
‘হাত’ শব্দের কয়েকটি বিশিষ্ট ব্যবহার লেখো।
উত্তরঃ হস্ত – ভিখারীটার হাত দুখানা খুব লম্বা।
দক্ষতা – কবিতা লেখায় মহিমের হাত মজবুত।
আঠারো ইঞ্চি – পাঁচ হাত দড়ি কেনা হয়েছে।
অধিকার থাকা – বাবার হাতে এখন টাকা নেই।
কররেখা বিচার – জ্যোতিষিটি ভালো হাত দেখেন।
যোগদান করা – বিনা অনুমতিতে কারো কাজে হাত দিও না।
অধীনে থাকা – রমেশ আমার হাতের লোক।
প্রভাব থাকা – তার ঋণ পাওয়াতে বাবার হাত ছিল।
এসো বাক্য রচনা করি।
মুখ চোরা, মুখ ঝামটা, মুখ সামলান, মুখরক্ষা, মুখ চুন হওয়া, মুখভার।
মুখচোরা (লাজুক) – মেয়েটি খুব মুখ চোরা।
মুখ ঝামটা (বকা, তিরস্কার) – আঃ ছেলেটাকে মুখ ঝামটা দিও না।
মুখ সামলান (সাবধানে কথা বলা) – মুখ সামলে কথা বল নইলে শাস্তি পাবে।
মুখরক্ষা (সম্মান রক্ষা) – পরীক্ষায় ভালো ফল করে মহিম বংশের মুখরক্ষা করেছে।
মুখ চুন হওয়া (লজ্জা পাওয়া) – চুরি করে ধরা পড়ায় তার মুখ চুন হয়ে গেল।
মুখ ভার (অভিমান) – চকোলেট না পাওয়ায় মিনির মুখ ভার।
গ-সম্প্রসারণ
শ্যামলী গাই নেপাল ও গোপালকে দুধ দিত। এইভাবে আর কী কী গৃহপালিত জন্তু আমাদের জীবিকা নির্বাহে সাহায্য করে?
উত্তরঃ বলদ — জমি চাষ করতে সাহায্য করে।
হাঁস — ডিম ও মাংস সরবরাহ করে।
মুরগি — ডিম ও মাংস সরবরাহ করে।
ছাগল — দুধ ও মাংস সরবরাহ করে।
ভেড়া — লোম ও মাংস সরবরাহ করে। লোম থেকে শাল, কম্বল হয়।
গাধা — মাল বহনে সাহায্য করে।
‘নেপাল ও গোপাল’ গল্পটিতে তোমরা দেখলে যে – শেষে নেপাল দারুণ জব্দ হল আর লজ্জাও পেল খুব। এরকম খারাপ কাজের ফল কখনও ভালো হয় না। তোমরা কোন কাজগুলোকে খারাপ বলে ভাব?
উত্তরঃ (ক) মিথ্যা কথা বলা।
(খ) পরের জিনিস না বলে নেওয়া।
(গ) বড়দের অসম্মান করা।
(ঘ) বন্ধুদের নোংরা কথা বলা।
(ঙ) প্রাণীদের জ্বালাতন করা।
(চ) দরকারী জিনিস লুকিয়ে রাখা।
(ছ) নষ্ট বা অপচয় করা।
(জ) জামাকাপড় নোংরা করা।
(ঝ) যেখানে সেখানে থুথু ফেলা।
(ঞ) ঘর নোংরা করা।
নীচের কথাগুলো পড়ে তোমরা নিজেরা গল্পটি সম্পূর্ণ করো। একটি বনে এক বাঘ থাকত। সে ছিল বনের রাজা। প্রতিদিন সে বনের জীবজন্তু শিকার করে খেত। তাই একদিন বনের এক খরগোশ ভাবল……….।
উত্তরঃ একটি বনে একটি বাঘ থাকত। সে ছিল বনের রাজা। প্রতিদিন সে বনের জীবজন্তু শিকার করে খেত। তাই একদিন বনের এক খরগোশ ভারল বাঘটিকে জব্দ করে বনের জীবজন্তুদের রক্ষা করতে হবে। যেমন ভাবা তেমনি কাজ। সে এক ছুটে বাঘের কাছে গিয়ে বলল, ‘রাজামশাই ! রাজামশাই !! জঙ্গলে আরো একটা বাঘ এসেছে এবং সে নিজেকে রাজা বলে দাবী করছে।’ শুনে বাঘ তো খুব রেগে গেলো, বলল, ‘চল তো দেখি।’ খরগোশ বাঘটিকে একটি কুয়োর কাছে নিয়ে এলো এবং নিচের দিকে তাকাতে বলল। বাঘ নিচের দিকে তাকিয়ে জলে নিজের প্রতিবিম্ব দেখে ভাবল সত্যিই আর একটি বাঘ। সে গর্জন করে উঠলো। কুয়োর ভেতর থেকেও গর্জন ভেসে এলো। বাঘটি রেগে দ্বিতীয় বাঘটিকে মারার জন্য কুয়োর মধ্যে লাফিয়ে পড়ল। খরগোশ এই ফাঁকে জঙ্গলের অন্য পশুদের ডেকে আনলো। বাঘটি জলে ডুবে মরে গেল। সবাই খুব খুশী হলো।
তোমরা খবরে শুনেছ, চিতা বাঘ অরণ্য ছেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। বলতে পারো কারণ কী?
উত্তরঃ মানুষজন বসতির জন্য জঙ্গল কেটে ফেলছে। ফলে জীবজন্তু কমে যাচ্ছে। চিতাবাঘের খাবারে টান পড়ছে। সেইজন্য ক্ষুধার্ত চিতাবাঘ খাবারের খোঁজে লোকালয়ে প্রবেশ করছে।
যদি তোমাদের অঞ্চলে বাঘ বা অন্য প্রাণী হঠাৎ চলে আসে তবে তুমি কী করবে?
উত্তরঃ আমাদের অঞ্চলে বাঘ বা অন্য প্রাণী হঠাৎ চলে এলে আমি সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির মধ্যে ঢুকে দরজা বন্ধ করবো। বড়দের জানাবো। মাকে আগুন জ্বালাতে বলবো। টিন বা ড্রাম পেটাবো। বাড়িতে পটকা থাকলে ফাটাবো। বড়দের বলবো বনবিভাগে খবর দিতে।
নীচের ছবিটি দেখো এবং লেপ কীভাবে তৈরি করা হয় তা আলোচনা করে লেখো।
উত্তরঃ ধূনুচি সর্বপ্রথম তুলোগুলোকে ধোনাই করা যন্ত্র দিয়ে ধূনে নেয়। তারপর তুলোগুলোকে একটি কাপড়ের খোলে ঢোকায়। একটি ছড়ি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে তুলোগুলিকে পিটিয়ে পিটিয়ে একটি জাজিমের রূপ দেয়। তারপর এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত সমান্তরাল করে চার আঙুল তফাতে তফাতে সেলাই করে। এভাবে লেপ তৈরি হয়।
ঘ—প্রকল্প
তোমরা প্রত্যেকে এক একটি গল্প সংগ্রহ করে পড়বে বা বড়োদের থেকে শিখবে। সেই গল্পটি শ্রেণিতে সবাইকে শোনাবে।
বিভিন্ন জীব-জন্তু নিয়ে একটি অরণ্যের ছবি আঁকো।
উত্তরঃ প্রকল্পগুলো ছাত্রছাত্রীরা নিজে চেষ্টা করো ।